আলিগড়ের ফলের রস বিক্রেতা মহম্মদ রহিস এবং তাঁর পরিবার। আয়করের নোটিস পাওয়ায় উদ্বিগ্ন। ছবি: সংগৃহীত।
দু’জনই ব্যবসায়ী। এক জন ঠেলাগাড়িতে ডিম বিক্রি করেন। আর এক জন রাস্তার ধারে ফলের রস বিক্রি করেন। দু’জনই পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তি। দিনে সামান্য উপার্জনকারী এই দুই ব্যবসায়ীর কাছে দু’দিন আগেই আয়কর দফতর থেকে নোটিস আসে। জিএসটি-র টাকা মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাতে। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু টাকার পরিমাণ দেখে দুই ব্যবসায়ীরই ভিরমি খাওয়া অবস্থা হয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের দামো জেলার ডিম বিক্রেতা প্রিন্স সুমন। তাঁর দাবি, আয়কর দফতর থেকে যে নোটিস তিনি পেয়েছেন সেখানে তাঁর ৫০ কোটি টাকার ব্যবসার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সুমনের দাবি, কোনও রকমে ডিম বিক্রি করে সংসার চালান তিনি। ঠেলাগাড়িতে ডিম বিক্রি করেন। অথচ ৫০ কোটি টাকার ব্যবসা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সেই অনুযায়ী ৬ কোটি টাকার বকেয়া জিএসটি-ও মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নোটিসে।
সুমনের দাবি, যে নোটিস তিনি পেয়েছেন, সেখানে তাঁর সংস্থার নাম উল্লেখ করা হয়েছে ‘প্রিন্স এন্টারপ্রাইজ়’। ঠিকানা: দিল্লি, জ়োন ৩। ২০২২ সালে সংস্থাটি খোলা হয়েছে। চামড়া, কাঠ এবং লৌহদ্রব্যের ব্যবসা করে সংস্থাটি, নোটিসে এটাও উল্লেখ করা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, গত দু’বছর ধরে জিএসটি দিচ্ছে না সংস্থাটি। নোটিস পাওয়ার পর সুমন বলেন, ‘‘ঠেলাগাড়িতে ডিম বিক্রি করি। কখনও দিল্লি যাইনি। অথচ আমাকে দিল্লির বাসিন্দা দেখিয়ে নোটিস পাঠিয়েছে আয়কর দফতর। কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।’’
সুমনের বাবা শ্রীধর সুমন বলেন, ‘‘আমাদের যদি ৫০ কোটি টাকার ব্যবসাই থাকত, তা হলে কি এত কষ্ট করতাম?’’ সুমনের আইনজীবী জানিয়েছেন, মনে করা হচ্ছে, ব্যবসায়ীর নথির অপপ্রয়োগ করা হয়েছে। পুলিশ এবং আয়কর দফতরকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।
অন্য দিকে, উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের ফলের রস বিক্রেতা মহম্মদ হরিস। তিনিও সাড়ে ৭ কোটি টাকার বকেয়া জিএসটি-র নোটিস পেয়েছেন বলে দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘জানি না কেন এই নোটিস দেওয়া হল। আমি ফলের রস বিক্রি করি। এত টাকা নিজের চোখেও দেখিনি। কী করব ভেবে পাচ্ছি না। সরকারের কাছে অনুরোধ বিষয়টি দেখুন। আমি গরিব মানুষ।’’ প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, রহিসের তথ্য চুরি করে কাজে লাগানো হয়েছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন রহিস।