লিবারেশনের পার্টি কংগ্রেস উপলক্ষে অধিবেশনের মঞ্চে তেজস্বী যাদব, দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, নীতীশ কুমার, সলমন খুরশিদ-সহ বিরোধী শিবিরের নেতারা। নিজস্ব চিত্র।
দেশে লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে বিজেপি-বিরোধী ঐক্যের লক্ষ্যে তাদের পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চকে তুলে ধরার চেষ্টা করল সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন। হিন্দুত্ববাদী ও কর্পোরেট সংস্কৃতির মোকাবিলায় বিকল্প গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বামেদের ভূমিকার কথা বললেন বিভিন্ন বামপন্থী দল ও সংগঠনের নেতারা। তারই পাশাপাশি বিহারের মহাজোটের মুখ নীতীশ কুমার, তেজস্বী যাদবেরা বিজেপিকে রুখতে তাঁদের ওই উদ্যোগকে আরও প্রসারিত করার কথা বললেন। ছিলেন কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সলমন খুরশিদও।
পটনায় চলছে লিবারেশনের একাদশ পার্টি কংগ্রেস। সেখানে ‘ফ্যাসিবাদ’ মোকাবিলায় সর্বাত্মক লড়াইয়ের ডাক দিয়ে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, আলোচনাও হয়েছে। পার্টি কংগ্রেসের শুরুতে আমন্ত্রিত হয়ে পটনায় গিয়েছিলেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম, সিপিআইয়ের পল্লব সেনগুপ্ত, আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য, ফরওয়ার্ড ব্লকের জি দেবরাজন প্রমুখ। সেলিম ব্যাখ্যা করেছেন, আরএসএস-বিজেপির আদর্শগত প্রতিপক্ষ বামেরা। বিজেপি দেশকে যে হিন্দুত্ববাদী এবং স্বৈরাচারী রাষ্ট্র গড়ার দিকে নিয়ে চলেছে, তাকে প্রতিহত করতে গণতান্ত্রিক বিকল্প ও ঐক্য গড়ে তোলার দায়িত্ব বামেদেরই নিতে হবে।
পার্টি কংগ্রেসের তৃতীয় দিনে লিবারেশনের ডাকে ‘সংবিধান বাঁচাও, গণতন্ত্র বাঁচাও, ভারত বাঁচাও’ শীর্ষক অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ, উপ-মুখ্যমন্ত্রী এবং আরজেডি নেতা তেজস্বী, কংগ্রেসের সলমনেরা। নীতীশের বক্তব্য, বিজেপির নেতৃত্বে এনডিএ জনতার চেয়ে নিজেদের স্বার্থকে বড় করে দেখছিল বলেই তাঁরা গেরুয়া শিবির বেরিয়ে এসেছিলেন। বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে লালুপ্রসাদের আরজেডি, কংগ্রেস এবং অন্য শক্তি মিলিয়ে ৭ দলকে নিয়ে তাঁরা যে মহাজোট গড়েছেন, বিহারের মানুষ তার পক্ষে রায় দিয়েছেন। এখন এই বিরোধী ঐক্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময়। কারণ, বিজেপির মোকাবিলার কাজ শুধু বিহারে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। তেজস্বীর মতে, ‘‘আমরা বারবারই বলেছি, যেখানে আঞ্চলিক দল শক্তিশালী, সেখানে তাদের কেন্দ্র করেই বিজেপি-বিরোধী ঐক্য হওয়া উচিত। আর যেখানে বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের মুখোমুখি লড়াই, সেখানে আমরা কংগ্রেসকে সমর্থন করব।’’ এই অধিবেশনে অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেসকে আমন্ত্রণ করা হয়নি। বিশেষ অধিবেশনে লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘‘সংবিধান এবং গণতন্ত্র যেখানে আক্রান্ত, সেখানে নির্ণায়ক লড়াই লড়তে হবে। ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে বৃহত্তর বিরোধী ঐক্য প্রয়োজন। জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি থেকে দেশকে উদ্ধার করার জন্য এই পার্টি কংগ্রেস সর্বাত্মক প্রতিরোধের ডাক দিচ্ছে।’’ কংগ্রেস নেতা সলমনের কথায়, ‘‘বিরোধী ঐক্যের সামনে বিজেপি পিছু হটতে বাধ্য!’’