দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ফাইল চিত্র।
দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় আজ মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের ব্যক্তিগত সচিব বৈভব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ওই মামলায় আগামী রবিবার দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছে সিবিআই। তাই মণীশের পরে কেজরীওয়ালের ব্যক্তিগত সচিবকে জিজ্ঞাসাবাদ দেখে অনেকেই মনে করছেন ক্রমশ বৃত্ত ছোট করে আনছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। যার চূড়ান্ত লক্ষ্য আবগারি দুর্নীতিতে আদালতে জমা দেওয়া দ্বিতীয় চার্জশিটে নাম থাকা মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল।
দিল্লি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নতুন আবগারি নীতির মাধ্যমে ঘুরপথে বেআইনি ভাবে ঘনিষ্ঠ লোকেদের মদের দোকানের লাইসেন্স পাইয়ে দিতে পরোক্ষ ভাবে সাহায্য করেছিলেন আপ শীর্ষ নেতৃত্ব। ইডির অভিযোগ, সব মিলিয়ে ওই দুর্নীতিতে প্রায় ১০০ কোটি টাকার বেশি ঘুষ দেওয়া হয়েছিল আপ-কে। যে টাকার বড় অংশ পরে ব্যবহার করা হয় গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে। ইডি সূত্রের মতে, ২০২১-২২ সালে যখন আবগারি নীতি তৈরি হচ্ছিল সেই সময়ে ওই বৈঠকে কেন বৈভবের উপস্থিতির প্রয়োজন ছিল, তা যেমন আজ জানতে চাওয়া হয়েছে, তেমনই বৈভব-সহ ওই মামলায় অভিযুক্তেরা সেই সময়ে কথা বলার পরে ১৭০টি মোবাইল ফোন নষ্ট করে দিয়েছিল বা সিম পরিবর্তন করেছিল বলে তদন্তে জানতে পেরেছে ইডি। বিশেষত ওই সময়ে বৈভবের মোবাইলে থাকা আইএমইআই নম্বর চার বার পরিবর্তন করা হয়েছিল। কী লুকোতে, কোন উদ্দেশ্যে তা করা হয়েছিল, আজ জানতে চেয়েছে ইডি।
আপের ঘরোয়া বৃত্তে বৈভবকে কেজরীওয়ালের কার্যত ছায়াসঙ্গী হিসাবে ধরা হয়। তাই প্রশাসনে কেজরীওয়ালের ডান হাত মণীশ সিসৌদিয়ার পরে এ বার যে ভাবে আর এক ঘনিষ্ঠ বৈভবকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছে ইডি, তা থেকে মনে করা হচ্ছে আগামী দিনে তদন্তকারী সংস্থার প্রধান নিশানা হতে পারেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। যদিও কেজরীওয়াল বলেছেন, “ইডির ওই মামলা অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়ার নয়। আসলে ভয় দেখিয়ে শাসক দলের জন্য বিধায়ক বেচাকেনায় সাহায্য করে থাকে ইডি।” এ দিকে একের পর এক ওঠা দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আজ সকালে আপের দিল্লির সদর কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। শুরুতে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ হলেও, পরে আপ সমর্থকেরা পাল্টা বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করলে উত্তেজক পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিজেপি সমর্থকেরা জোর করে আপের কার্যালয়ে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ কোনও ভাবে তাদের থামায়।