নির্বাচন কমিশন। ফাইল চিত্র।
এত দিন পরিচয় গোপন রেখেই সর্বাধিক কুড়ি হাজার টাকা অর্থসাহায্য করা যেত রাজনৈতিক দলগুলিকে। নগদে অর্থ সাহায্যের সেই ঊর্ধ্বসীমা দু’হাজার টাকায় বেঁধে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিষয়টি নিয়ে আজ রাজধানীতে সরব হয়েছেন কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা।
কংগ্রেসের বক্তব্য, নির্বাচনী বন্ড আসার পরে ৯০ শতাংশ চাঁদা বিজেপির কাছে যাচ্ছে। বাকি ১০ শতাংশ পাচ্ছে সমস্ত বিরোধী শিবির। তা নিয়েও আলোচনা হওয়া উচিত। কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে বলেন, ‘‘এত চাঁদা কোথা থেকে আসে, কী ভাবে তা অন্য দল ভাঙানোর কাজে লাগানো হয়, সে সব নিয়েও নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে। যে ভাবে অর্থের জোরে নির্বাচিত সরকার ফেলে দেওয়া হচ্ছে, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের ভাবনা-চিন্তা করা উচিত।’’
তৃণমূলের লোকসভার বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “অরুণ জেটলির সময়ে তাঁরই বুদ্ধিতে নির্বাচনী বন্ডের বিষয়টি চালু করা হয়। এর কৌশল হচ্ছে, সবচেয়ে বেশি টাকা নেব, কিন্তু নামও থাকবে না। এখনও পর্যন্ত এই বন্ডের সবচেয়ে বেশি টাকা গিয়েছে বিজেপির ঘরে।”
নির্বাচন কমিশনের যুক্তি, নির্বাচনী সংস্কার এবং ভোটে কালো টাকার ব্যবহার রুখতেই এই প্রস্তাব আনা হয়েছে। আয়কর বিভাগের তল্লাশিতে দেখা গিয়েছে, বেশ কিছু দলের তহবিলে খাতায়-কলমে জমা পড়েছে হয়তো ১ লক্ষ টাকা। অথচ সেই দল সব মিলিয়ে দান পেয়েছে কুড়ি থেকে তিরিশ কোটি টাকা। কমিশনের আশঙ্কা, ছোট দলগুলির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার চক্র সক্রিয় রয়েছে।
এত দিন বিধানসভা বা লোকসভা ভোটের সময়ে কোনও প্রার্থী নিজের প্রচারে কত টাকা খরচ করছেন, তা জানাতে বাধ্য থাকতেন। এ বার প্রার্থীরা সেই ভোটে লড়ার জন্য কত টাকা দান পেয়েছেন, তা-ও জানাতে বাধ্য থাকবেন। কমিশন সূত্রের মতে, খরচ ও দানের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে এবং আগামী দিনে নির্বাচনে কালো টাকার ব্যবহার রুখতে ওই সংস্কারমুখী প্রস্তাবগুলি আইন মন্ত্রকের ছাড়পত্রের জন্য পাঠানো হয়েছে।