প্রতীকী ছবি।
নির্বাচনের সময় কালো টাকার রমরমা রুখতে এ বার দলীয় তহবিলে মোটা অঙ্কের অনুদানে বিধিনিষেধ আরোপ করার পথে এগোতে শুরু করল নির্বাচন কমিশন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোনও ব্যক্তির কাছ থেকে দলীয় তহবিলের জন্য ২০০০ টাকা বা তার বেশি অনুদান নেওয়া যাবে না, কমিশন এমনই আইন চাইছে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ইতিমধ্যেই সে বিষয়ে সুপারিশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
‘জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫১’ অনুসারে রাজনৈতিক দলগুলি জানাতে বাধ্য যে কারা দলের তহবিলে অনুদান দিলেন। কিন্তু সেই বিধি শুধু ২০ হাজার টাকা বা তার বেশি অনুদানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কমিশন সেই ঊর্ধবসীমা কমিয়ে আনতে চাইছে। ২০০০ টাকা বা তার বেশি অনুদান কারও থেকে নিলেই, সেই ব্যক্তি বা সংস্থার নাম-ঠিকানা সংক্রান্ত বিশদ তথ্য জানাতে রাজনৈতিক দলগুলি বাধ্য থাকবে, কমিশন এ বার এই রকম আইন চাইছে। জনপ্রতিনিধিত্ব আইন সংশোধন করে এই ঊর্ধ্বসীমা কমিয়ে আনা সম্ভব। আইন সংশোধনের সেই কাজটি সরকারকেই করতে হবে। সংসদে বিল পেশ করে দ্রুত এই আইন সংশোধন করা হোক, ভারত সরকারকে এমনই সুপারিশ পাঠিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন: রাশ টানার চেষ্টাই নেই ভোটের কালো টাকায়
যাঁরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তহবিলে বিপুল অনুদান দেন অথচ নিজেদের নাম প্রকাশ করেন না, তাঁদের উপর নজরদারি বাড়ালেই নির্বাচনের বাজারে কালো টাকার রমরমা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে বলে কমিশন মনে করছে। দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যে সংস্কার আনার কথা ভাবা হচ্ছে, তার জন্য জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে এই সংশোধন জরুরি বলে কমিশনের মত। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যাঁদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অনুদান পায়, তাঁরা যে মূলত কালো টাকার কারবারি, তা নিয়ে ওয়াকিবহাল মহলের সংশয় নেই। নাম প্রকাশিত হওয়ার ভয় থাকলে মোটা টাকা রাজনৈতিক দলকে দিতে অনেকেই দু’বার ভাববেন। কারণ ওই টাকার উৎস কী, সে প্রশ্নও অচিরেই উঠবে। তাই কমিশনের সুপারিশ মেনে কেন্দ্রীয় সরকার জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫১ সংশোধন করলে, নির্বাচনী প্রচারে বেহিসেবি খরচ করার পথ অনেকটাই কণ্টকাকীর্ণ হয়ে পড়বে।