মাত্র বছর দুয়েক আগে গড়ে ওঠা এই অ্যাসোসিয়েশনের ব্যাপ্তি চোখে পড়ার মতো।
বাংলার শরৎকালের পূর্বাভাস মানেই পেঁজা তুলোর মতো মেঘ কিংবা গাছে গাছে শিউলি ফুলের রাশি। তবে সুদূঢ় প্রবাসে বসেও যে এমন একটা পরিবেশ অনুভব করা সম্ভব, তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হিন্ডন নদী তীরবর্তী নয়ডা এক্সটেনশন এলাকার টাউনশিপ গৌর সিটি। শহরের কোলাহল থেকে খানিক দূরে আপাত শান্ত এই টাউনশিপে মাতৃবন্দনার এটি দ্বিতীয় বছর। আয়োজনে ‘গৌর সিটি বেঙ্গলি কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন’।
আরও পড়ুন: এসেক্সের পুজোয় শিকড়ের টান
মাত্র বছর দুয়েক আগে গড়ে ওঠা এই অ্যাসোসিয়েশনের ব্যাপ্তি চোখে পড়ার মতো। নিজেদের শিকড়ের সঙ্গে যোগসূত্র বজায় রাখার লক্ষ্যেই ২০১৬ সালে জনাকয়েক উৎসাহী বাঙালি এই অ্যাসোসিয়েশনের স্থাপনা করেন। ‘গৌর সিটি এক’-এর রাধাকৃষ্ণ পার্ক প্রাঙ্গনে বেশ বড়সর পরিসরে আয়োজিত হচ্ছে এ বারের দুর্গাপুজো।
সাবেক ডাকের সাজে এক চালার মায়ের মূর্তি।
প্রস্তুতির পারদ ঊর্ধ্বমুখী। সাবেক ডাকের সাজে এক চালার মায়ের মূর্তি। মণ্ডপ সজ্জাতেও ষোলোয়ানা বাঙালিয়ানর ছাপ স্পষ্ট। প্রাচীন বাঙালি মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। কলকাতা থেকে ঢাকি এবং পুরোহিত আসছেন। নবমীর দিন কুমারী পুজোর ব্যবস্থাও করা হয়। নিয়ম-নিষ্ঠা মেনে পুজোর ব্যবস্থা করা তো হয়ই। একই সঙ্গে প্রবাসেও বাঙালি সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখতে পুজোর চারটে দিনই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়। এ বছরের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি তুঙ্গে। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে মঞ্চস্থ হবে ‘দেবস্তুতি’, ‘ভানুসিংহের পদাবলী’, লোকগীতি, শ্রুতিনাটক, কবিতা পাঠ, কচি-কাঁচাদের ‘হিংসুটে দৈত্য’ নাটক এবং বেশ কিছু মনগ্রাহী নৃত্যানুষ্ঠান।
পুজোর চারটে দিনই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়।
তবে শুধুমাত্র দুর্গাপুজো আয়োজনের মধ্যেই নিজেদের কর্মকাণ্ডকে সীমাবদ্ধ করে রাখে না এই অ্যাসোসিয়েশন। সারা বছর ধরেই বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকেন এখানকার সদস্যরা। আগামীতে রক্তদান শিবির, বিনামূল্যে চক্ষু পরীক্ষা শিবিরের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। একইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বন্যা দুর্গত জেলার বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন। অতএব, সারা বছরের অক্সিজেন জোগাড় করতে আপাতত প্রহর গুনছে ‘গৌর সিটি বেঙ্গলি কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন’।