প্রদীপ কুরুলকর। —ফাইল চিত্র।
গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গত মে মাসে গ্রেফতার করা হয়েছিল ডিআরডিও (ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গ্যানাইজ়েশন)-র বিজ্ঞানী প্রদীপ কুরুলকরকে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ‘হানি ট্র্যাপ’-এর ফাঁদে পড়ে দেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল বেশ কিছু তথ্য পাক গুপ্তচর সংস্থার এক মহিলা কর্মীর কাছে ফাঁস করে দিয়েছিলেন প্রদীপ। তদন্তে নেমে মহারাষ্ট্রের সন্ত্রাস দমন শাখা (এটিএস) এ বার জানিয়েছে, ওই মহিলার সঙ্গে দেখা করে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র সংক্রান্ত গোপন তথ্য দেখাবেন বলে জানিয়েছিলেন ৫৯ বছরের ওই বিজ্ঞানী।
জ়ারা দাশগুপ্ত নাম নিয়ে প্রদীপের সঙ্গে অনলাইনে আলাপ জমিয়েছিলেন পাক গুপ্তচর সংস্থার ওই কর্মী। বেশ কিছু অশালীন ছবি ও মেসেজও তিনি ওই বিজ্ঞানীকে পাঠিয়েছিলেন বলে জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা। আরএসএস-ঘনিষ্ঠবলে পরিচিত ওই বিজ্ঞানী ডিআরডিও-র রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এস্ট্যাবলিশমেন্ট (ইঞ্জিনিয়ার্স) ল্যাবরটেরিতে কর্মরত ছিলেন। ২০২২ সালের ১০ জুন থেকে ২০২৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জ়ারার সঙ্গে প্রদীপের হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে একটানা বার্তালাপ চলেছিল বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। হোয়াটসঅ্যাপে সেই বার্তালাপেই দেখা গিয়েছে, ২০২২ সালের ১৯ থেকে ১৮ অক্টোবর— এই সময়ের মধ্যে জ়ারার সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে দেখা করে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রের গোপন এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেখানোর কথা জানিয়েছিলেন প্রদীপ। তবে শুধু ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রই নয়, অগ্নি-৬, কোয়াডকপ্টারের মতো প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত আরও নানাবিষয়ে প্রদীপের থেকে জানতে চেয়েছিলেন জ়ারা।
জ়ারা নিজেকে প্রদীপের কাছে লন্ডনের এক সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বলে দাবি করেছিলেন। তদন্তকারীদের দাবি, ধৃত বিজ্ঞানীর ক্ষমতা ওপদের অপব্যবহার করে এ দেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বেশ কিছু সংবেদনশীল তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ওই মহিলা। এখনও ওই মহিলার খোঁজ চলছে বলে এটিএস সূত্রে জানানো হয়েছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, জ়ারা নামের ওই মহিলাকে প্রদীপ জানিয়েছিলেন ব্রহ্মসের মতো ক্ষেপণাস্ত্র সংক্রান্ততথ্য এতটাই গোপন এবং সংবেদনশীল যে ই-মেল বা হোয়াটসঅ্যাপেরমাধ্যমে তিনি সেগুলি পাঠাতে পারবেন না। বরং তার জায়গায় জ়ারাকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসার কথা বলেছিলেন প্রদীপ। তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি ট্রেসিং করে ওই সব তথ্য জ়ারাকে দেবেন। ওই বার্তালাপের বিষয়টি পুণের আদালতকে জানিয়েছেন এটিএসের তদন্তকারী অফিসারেরা। প্রদীপের বিরুদ্ধে ১৮৩৭ পাতার চার্জশিট পেশ করেছে এটিএস। যেখানে ব্রহ্মস নিয়ে তথ্য দেখানোর বিষয়টিওজানানো হয়েছে।