প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।—ছবি এপি।
ফি-মাসের শেষ রবিবার রেডিয়োয় মনের কথা শোনান প্রধানমন্ত্রী। আজ শোনালেন, কোনও দিন রাজনীতিতে আসার ‘মন ছিল না’। কোনও দিন ভাবেনওনি নরেন্দ্র মোদী।
নভেম্বরের চতুর্থ রবিবার ‘এনসিসি দিবস’। রেডিয়োর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কথা বলছিলেন এনসিসি-র সদস্যদের সঙ্গে। তাঁদেরই এক জন প্রশ্ন করেন মোদীকে, ‘‘নেতা না হলে কী হতেন?’’ জবাবে প্রধানমন্ত্রী হেসে বলেন, ‘‘ছোট থেকে অনেকের অনেক কিছু হবার ইচ্ছা হয়। কিন্তু সত্যি বলতে, কোনও দিন রাজনীতিতে আসার মন ছিল না। ভাবিওনি কখনও।’’ অবশ্য এখানেই নিজের বক্তব্যের ইতি টানেননি প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে জুড়েছেন, ‘‘কিন্তু এসেই যখন পড়েছি, তখন আর দিন-রাত বিচার করি না। দেশের সেবায় পুরোপুরি সঁপে দিয়েছি নিজেকে।’’
মহারাষ্ট্রই এখন টাটকা খবর। মধ্যরাতে যে ভাবে সেখানে মুখ্যমন্ত্রী-উপমুখ্যমন্ত্রীর শপথ করিয়ে নেওয়া হল, তার পরে গোটা বিরোধী শিবিরের নিশানায় প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। বিরোধীরা বলছে, মন্ত্রিসভার বৈঠক না-ডেকে প্রধানমন্ত্রী নিয়ম এড়ানোর ব্যাপারে নিজের যে বিশেষ অধিকার প্রয়োগ করেছেন, সেটি ইন্দিরা গাঁধীর জরুরি অবস্থাকে মনে করিয়ে দেয়। নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে গণতন্ত্র ও সংবিধান পায়ে দলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীদের এই অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কানে পৌঁছয়নি, এমন নয়। তাও তিনি আজ সংবিধান রক্ষার কথাই বললেন। সুপ্রিম কোর্টের অযোধ্যা রায়ের পর দেশে সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সবাইকে অভিনন্দন জানালেন। তারিফ করলেন বিচার ব্যবস্থারও।
প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘‘দু’দিন পরেই ‘সংবিধান দিবস’ পালন হবে। সংবিধান গ্রহণের এ বারে ৭০ বছর। সংসদে বিশেষ কর্মসূচি হবে। ভারতের সংবিধান প্রতি নাগরিকের অধিকারকে সম্মান জানায়। সংবিধানের আদর্শকে মেনে নিয়েই রাষ্ট্র নির্মাণে আমাদের এগোনো কর্তব্য। এই স্বপ্নই সংবিধান নির্মাতারা দেখেছিলেন।’’ অযোধ্যা রায় প্রসঙ্গে মোদীর বক্তব্য— ‘‘১৩০ কোটি ভারতীয় প্রমাণ করেছেন, দেশের উপরে কিছু নয়। সবার ওপরে দেশের শান্তি, ঐক্য, সম্প্রীতি। রামমন্দির নিয়ে ফয়সালা পুরো দেশ স্বাগত জানিয়েছে। বিচার ব্যবস্থারও সম্মান বেড়েছে।’’
মাহারাষ্ট্র নিয়ে আজ দিনভর ব্যস্ত সব দল। সকাল থেকে মহারাষ্ট্রের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টেই ছিলেন কংগ্রেসের নেতারা। তত ক্ষণে প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাত’ শেষ। কংগ্রেসের এক নেতাকে প্রশ্ন করা হল, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলছেন, তিনি কখনও রাজনীতিতে আসতে চাননি! এ নিয়ে কী বলবেন?’’
চমকে গিয়ে আরও এক বার প্রশ্নটি শুনতে চান কংগ্রেস নেতা। দ্বিতীয় বার শোনার পরে অট্টহাসি হেসে চলে যান তিনি!