চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াঙ্গ ই'র সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ভারতের ‘বিমর্ষ’ হওয়া উচিত নয়। এনএসজি-র (পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠী) দরজা ভারতের জন্য চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়নি। চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াঙ্গ ই-র বিমান নয়াদিল্লির মাটি ছোঁয়ার কথা যে দিন, ঠিক সেই দিনেই নিজেদের সরকারি সংবাদমাধ্যমে এমন মতপ্রকাশ করল বেজিং। ভারত এবং চিনের উচিত নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য মিটিয়ে নেওয়া। এমন কথাও লেখা হয়েছে চিনা সংবাদ সংস্থা জিনহুয়ার একটি প্রতিবেদনে।
জিনহুয়ার ওই প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, এনএসজি-র সদস্য হতে না পারার জন্য চিনকে দোষারোপ করা ভারতের উচিত নয়। ৪৮ দেশের সংগঠন জুন মাসে যে বৈঠকে বসেছিল, সেই বৈঠকে ভারতের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব হয়নি। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক চিনের নাম না করলেও জানিয়েছিল, একটি মাত্র দেশের বিরোধিতায় ভারতের এনএসজি-প্রবেশ আটকে গিয়েছে। সংসদে এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ অবশ্য খোলাখুলিই জানিয়েছিলেন, চিনই ভারতের সামনে সবচেয়ে বড় বাধার প্রাচীর। তবে চিনের সঙ্গে এ নিয়ে ভারত আরও আলোচনা চালাবে বলেও বিদেশ মন্ত্রী সংসদে জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: ভারতে চিনের বিদেশমন্ত্রী, সমঝোতা সহজ নয়, তবু চেষ্টা চালাবে দু’পক্ষই
তার পর চিনা বিদেশ মন্ত্রীর ভারত সফর যত কাছে আসতে শুরু করেছে, চিন ততই এনএসজি-তে ভারতের অন্তর্ভুক্তি আটকে যাওয়ার দায় নিজেদের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলতে উদগ্রীব হয়ে উঠেছে। এনএসজি ইস্যুকে ঘিরেই যে এই ভারত-চিন বৈঠক নিষ্ফলা হয়ে যেতে পারে, তা বেজিং জানে। তাই বেজিং-এর তরফে বার বার এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে যে, এনএসজি-তে ভারতের অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা এখনও যথেষ্টই রয়েছে। দিনকয়েক আগেই জিনহুয়া সংবাদ সংস্থার এক প্রতিবেদনে লেখা হয়েছিল, ‘‘নয়াদিল্লির বিমর্ষ হওয়া উচিত নয় কারণ এনএসজি-র দরজা তাদের জন্য খুব শক্ত করে বন্ধ হয়ে রয়েছে, এমন নয়।’’ যদিও এনপিটি (পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি) সই না করা পর্যন্ত এনএসজি-তে ভারতের অন্তর্ভুক্তি কঠিন বলেও ওই প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছিল।
আজ, শুক্রবার রাতে দিল্লি পৌঁছচ্ছেন চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াঙ্গ ই। তাই জিনহুয়াতে শুক্রবার দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা আরও প্রশমনের চেষ্টা দেখা গেল। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যমে লেখা হল, ভারত এবং চিনের উচিত পারস্পরিক মতপার্থক্যগুলিকে সংযমের মধ্যে রাখা।