কাশ্মীরের এই ঘটনা মনে করাচ্ছে ‘থ্রি ইডিয়টস’ সিনেমাকে। ফাইল চিত্র।
ঠিক যেন বাস্তবের ‘থ্রি ইডিয়েটস’! যে ভাবে পর্দায় র্যাঞ্চো ভিডিয়ো কলে চিকিৎসক প্রিয়ার সাহায্য নিয়ে প্রসব করিয়েছিলেন, তেমনই যেন ঘটল কাশ্মীরে। এখানে র্যাঞ্চো তথা আমির খানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিনিধিরা। ‘থ্রি ইডিয়েটস’-এর মতোই বাস্তবেও হল মধুরেণ সমাপয়েৎ। কাশ্মীরের প্রান্তিক অঞ্চলে সন্তানপ্রসবে সহায় হল হোয়াট্সঅ্যাপ। মা এবং সদ্যোজাত, আপাতত ভাল আছেন দু’জনেই।
টানা তুষারপাতে মূল জনপদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল কাশ্মীরের কুপওয়াড়া জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম কেরান। ওই গ্রামেরই অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলা প্রসবযন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছন। কিন্তু সেখানে প্রসব করানোর মতো প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ছিল না। তা ছাড়া ওই মহিলার শারীরিক নানা সমস্যাও ছিল। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স বা হেলিকপ্টারের সাহায্যে জম্মু কিংবা শ্রীনগরে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু প্রাকৃতিক পরিস্থিতি প্রতিকূল থাকায় তা করা সম্ভব হয়নি।
এই অবস্থায় শহরের চিকিৎসকদের সাহায্য চান স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা। তখন হোয়াট্সঅ্যাপের ভিডিয়ো কলেই প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। ‘থ্রি ইডিয়েটস’-এ অন্তঃসত্ত্বা প্রিন্সিপালের মেয়ের জন্য যে সাহায্য নিয়েছিল র্যাঞ্চো, বাস্তবেও তেমনটাই ঠিক হয়েছিল।
ফোনে নির্দেশ অনুসরণ করেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা। কেরানের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক আরশাদ সোফির ফোনে ভিডিয়ো কল করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন ক্রালপোড়া মহকুমা হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ পারভেজ এবং তাঁর সহকারীরা। প্রায় ৬ ঘণ্টা প্রসবযন্ত্রণা সহ্য করার পর এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা। এই ঘটনা প্রসঙ্গে সোফি জানান, ওই মহিলার স্বাস্থ্যের কথা ভেবে তাঁরা হেলিকপ্টারে করে ওই মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যাবে ভেবেছিলেন। কিন্তু টানা দু’দিন প্রবল তুষারপাত হওয়ায় গোটা এলাকা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু এর পর অপেক্ষা করলে ঝুঁকি থেকে যেত। তাই তাঁরা ভিডিয়ো কলেই ভরসা রাখেন। ‘থ্রি ইডিয়েটস’-এর মতোই সফলও হন কাশ্মীরের প্রত্যন্ত গ্রামের স্বাস্থ্যকর্মীর। সিনেমায় নয়, বাস্তবে।