—প্রতীকী চিত্র।
সাত বছরের শিশুর ফুসফুসে আটকে ছিল সুচ। দিল্লি এমসে তারই সফল অস্ত্রোপচার হল। কাটাছেঁড়া না করেই সুচটি বার করে এনেছেন চিকিৎসকেরা। সাহায্য নেওয়া হয়েছে চুম্বকের। শিশুর দেহে এই অস্ত্রোপচার সাড়া ফেলে দিয়েছে চিকিৎসামহলে।
শনিবার এমসের তরফে সফল অস্ত্রোপচারের কথা জানানো হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, শিশুটিকে গত বুধবার অত্যন্ত সঙ্কটজনক অবস্থায় এমসে ভর্তি করানো হয়েছিল। তার ঘন ঘন কাশি হচ্ছিল এবং সেই কাশির সঙ্গে গল গল করে রক্ত বেরোচ্ছিল। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে দেখেন, ওই শিশুর বাঁ দিকের ফুসফুসের গভীরে আটকে আছে একটি সুচ। চার সেমি দীর্ঘ সুচটির কারণেই কাশির সঙ্গে রক্ত বেরোচ্ছে শিশুর গলা থেকে। অবিলম্বে ওই সুচ সরানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন চিকিৎসকেরা।
এমসের চিকিৎসক বিশেষ জৈন জানান, তিনি দ্রুত এক পরিচিতের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি চুম্বক জোগাড় করেন। ছোট্ট, সরু চুম্বকটির প্রস্থ ছিল মাত্র দেড় মিলিমিটার। যা এই কাজের জন্য উপযুক্ত। চিকিৎসকেরা আরও জানান, শিশুর বুকে কাটাছেঁড়া করে সুচটি বার করা প্রায় অসম্ভব ছিল। কারণ, সুচটি ফুসফুসের এমন গভীরে গিয়ে আটকে ছিল যে, তা বার করে আনার পর্যাপ্ত জায়গা পাওয়া যেত না। সেই কারণেই চুম্বকের ব্যবহার। চিকিৎসকেরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এই পদ্ধতিতে সুচটি বার করার সিদ্ধান্ত নেন।
শিশুটির গলা দিয়ে চুম্বকটিকে অতি সাবধানে ফুসফুস পর্যন্ত পৌঁছে দেন চিকিৎসকেরা। অস্ত্রোপচারের এই অংশ ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, চুম্বক ঢোকানোর সময় কোনও ভাবে যদি তা শ্বাসনালীর সংস্পর্শে আসত, তবেই ঘটত বিপদ। তবে সে সব কিছুই হয়নি। দক্ষ হাতে চিকিৎসকেরা চুম্বকের অগ্রভাগ ফুসফুসের কাছে নিয়ে যান এবং সুচটি সঙ্গে সঙ্গে চুম্বকের টানে এগিয়ে আসে।
চিকিৎসকেরা জানান, এই পদ্ধতি কাজে না লাগলে চামড়া কেটে সুচটি বার করার চেষ্টা করতেন তাঁরা। তবে সেই পদ্ধতি অনেক বেশি ঝুঁকির হত। হাসপাতাল সূত্রে খবর, কী ভাবে সুচটি শিশুর ফুসফুসে ঢুকল, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি অভিভাবকেরা।