আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে শামিল চিকিৎসকেরা। ছবি: পিটিআই।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে শনিবার দেশব্যাপী ২৪ ঘণ্টার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে চিকিৎসক সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। জরুরি পরিষেবা চালু থাকলেও, বহির্বিভাগ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার ডাক দিয়েছে তারা। পূর্বনির্ধারিত কোনও অস্ত্রোপচারও হবে না। একাধিক রাজ্যে তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে সকাল থেকেই। দিল্লি, গুজরাট, তামিলনাড়ু, বিহার, মহারাষ্ট্র-সহ বিভিন্ন রাজ্যে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন চিকিৎসকেরা।
পটনা এমসের চিকিৎসকেরা আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে গণস্বাক্ষর গ্রহণ করেছেন। সকাল থেকেই বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে পটনা এমসের সামনে। একই ছবি ধরা পড়েছে দিল্লি এমসেও। দিল্লির তেগ বাহাদুর হাসপাতালে সকাল থেকে বন্ধ বহির্বিভাগের পরিষেবা। গুজরাটের রাজকোট সিভিল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসকেরা অবস্থান শুরু করেছেন। মিশ্র প্রভাব পড়তে দেখা গিয়েছে মুম্বইয়ের একাধিক হাসপাতালেও। মুম্বইয়ের সিয়ন হাসপাতালে এক রোগীর পরিজন সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। ডাক্তারদের সংখ্যা কম থাকলেও পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি।
কর্মস্থলে নিরাপত্তার দাবিতে পোস্টার হাতে প্রতিবাদ শুরু করেছেন তাঁরা। প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন আমদাবাদের চিকিৎসকদের একাংশও। আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে পোস্টার-ব্যানার হাতে রাস্তায় নেমেছেন তাঁরা। চেন্নাইয়ে রাজীব গান্ধী হাসপাতাল ও মাদ্রাজ মেডিক্যাল কলেজের রেসিডেন্ট চিকিৎসকেরাও প্রতিবাদ অবস্থান শুরু করেছেন শনিবার সকাল থেকে। ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পাশাপাশি ১৪ অগস্ট গভীর রাতে আরজি করে যে দুষ্কৃতী তাণ্ডব চলেছে, তারও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তাঁরা। আইএমএ-র তরফে দাবি করা হয়েছে, ঝাড়খণ্ডের সিংহভাগ সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শামিল হয়েছেন। অসমের গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেও ধর্নায় চিকিৎসকেরা।
সেকেন্দরাবাদের এক মহিলা দন্ত চিকিৎসক ইতিমধ্যেই আরজি করের ঘটনায় চিঠি লিখেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কে। মনিকা সিংহ নামে ওই দন্ত চিকিৎসকের আইনজীবী জানিয়েছেন, আরজি করের ঘটনাস্থল সুরক্ষিত রাখতে এবং চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান মোতায়েনের আর্জি নিয়ে ওই চিঠি লিখেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, শনিবার সকাল ৬টা থেকে রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। মোট পাঁচ দফা দাবি তোলা হয়েছে। প্রথম দাবি, ১৮৯৭ সালের মহামারি আইনে যে সংশোধনীগুলি ২০২৩ সালে আনা হয়েছিল, সেগুলিকে হাসপাতাল সুরক্ষা বিল, ২০১৯-এর সঙ্গে যুক্ত করে একটি মজবুত আইন প্রণয়ন করতে হবে। দ্বিতীয় দাবি, বিমানবন্দরগুলির সমতুল্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখতে হবে হাসপাতালগুলিতে। তৃতীয় দাবি, চিকিৎসকদের জন্য নিরাপদ কর্মস্থলের বন্দোবস্ত করতে হবে। চতুর্থ দাবি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে এবং ভাঙচুরের ঘটনাতেও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পঞ্চম দাবি, শোকসন্তপ্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।