National News

বড়ো জঙ্গিদের সঙ্গে আলোচনা ঘিরে অসন্তোষ

বড়ো সংগঠনগুলি পৃথক বড়োল্যান্ডের দাবি তুলেছে। ব্রহ্মপুত্রের উত্তর পারে, ধুবুড়ি থেকে লখিমপুর পর্যন্ত বড়ো অধ্যূষিত এলাকাগুলিতে স্বশাসন চাওয়া গোষ্ঠীগুলির দাবি তারাই অসমের আদি অধিবাসী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৩৮
Share:

এনডিএফবি নেতা রঞ্জন দৈমারি। ছবি: সংগৃহীত।

বড়ো জঙ্গি সংগঠন এনডিএফবির সব গোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তি আলোচনার জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত এনডিএফবি নেতা রঞ্জন দৈমারিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হল। ২০০৮ সালে গুয়াহাটি, কোকরাঝাড়, বরপেটা রোড, বঙাইগাঁওতে হওয়া ধারাবাহিক বিস্ফোরণ, শতাধিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনার মূল মাথা রঞ্জন। বিশেষ ভাবে তৈরি গৌহাটি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ গতকালই ৫০ হাজার টাকার বন্ডে এক মাসের জন্য রঞ্জনের জামিনে মঞ্জুরি দেয়। আলোচনার স্বার্থে আপত্তি জানাননি সরকারপক্ষের আইনজীবী। আজ জেল থেকে বের হয়ে রঞ্জন দিল্লি গিয়েছেন। এনডিএফবির প্রগতিশীল ও সাওরাইগাওড়া গোষ্ঠীর নেতারা ইতিমধ্যেই দিল্লিতে। প্রজাতন্ত্র দিবসের পরে, সোমবারই আলোচনা শুরু হওয়ার কথা।

Advertisement

বড়ো সংগঠনগুলি পৃথক বড়োল্যান্ডের দাবি তুলেছে। ব্রহ্মপুত্রের উত্তর পারে, ধুবুড়ি থেকে লখিমপুর পর্যন্ত বড়ো অধ্যূষিত এলাকাগুলিতে স্বশাসন চাওয়া গোষ্ঠীগুলির দাবি তারাই অসমের আদি অধিবাসী। মিশ্র অসমিয় জাতি নয়। বড়ো ছাত্র সংগঠন আবসু ও বড়ো সাহিত্য সভাও পৃথক বড়ো রাজ্যের দাবি তুলেছে। লোকসভায় বড়োদের জন্য আসন সংরক্ষণেরও দাবি উঠেছে। গতকালই তাঁরা কেন্দ্রের মধ্যস্থতাকারী এ বি মাথুরের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনায় বসেন।

অবশ্য কেন্দ্র জানিয়েছে স্বশাসিত পরিষদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হলেও পূর্ণ রাজ্য দেওয়া কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। ইতিমধ্যেই তা আলোচনায় বসা জঙ্গিনেতাদের স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপাতত আলোচনা চলবে বড়োদের আরও বেশি রাজনৈতিক অধিকার প্রদান, সাংবিধানিক রক্ষাকবচ দেওয়া, আর্থিক সুযোগ-সুবিধা, বড়ো ভাষা ও সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রসার নিয়ে। বড়োদের দাবি মেনে স্বশাসিত পরিষদের সীমা লখিমপুর পর্যন্ত করার বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ধর্মের বিভাজন থেকে কি সত্যি মুক্ত রাখার চেষ্টা হয়েছিল সংবিধানকে? প্রশ্ন জয়পুরে

অবশ্য বড়ো জঙ্গিদের সঙ্গে শান্তি আলোচনা নিয়ে ইতিমধ্যেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে বড়োভূমির অবড়োদের মধ্যে। অবড়ো সংগঠনগুলির আশঙ্কা, বড়োরা আরও ক্ষমতা বা স্বশাসন পেলে বড়োভূমিতে থাকা অবড়োদের উপরে অত্যাচার বাড়বে। তাঁদের অধিকার আরও খর্ব হবে। বড়োভূমির অন্তর্গত কোকরাঝাড়ের সাংসদ তথা প্রাক্তন আলফা কম্যান্ডার নবকুমার (হিরা) শরণিয়া প্রস্তাবিত ইউনিয়ন টেরেটরিয়াল কাউন্সিলের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। ইতিমধ্যে অবড়োদের নিয়ে দলও গড়েছেন তিনি।

পাশাপাশি, সম্মিলিত জনগোষ্ঠী সংগ্রাম সমিতির নেতা ব্রজেন মহন্ত বলেন, “আমরা বিটিসির গঠন, বড়ো পরিষদে অবড়ো গ্রামগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করাই মেনে নিইনি। তাই ইউটিসি মানার প্রশ্নই নেই। ইউটিসি মেনে নিয়ে গণহত্যাকারী বড়ো উগ্রপন্থীদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিলে বন্দুকেরই জয় হবে।” কোচ রাজবংশী জাতীয় মহাসভার সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়ও বলেন, “অবড়োদের অধিকার খর্ব হলে তীব্র প্রতিবাদ গড়ে তোলা হবে।” আদিবাসী ছাত্র সংগঠনের সভাপতি স্টিফেন লাকরা বলেন, “অন্য সম্প্রদায়গুলিকে অন্ধকারে রেখে, রাজনৈতিক স্বার্থে বিজেপি বড়োদের সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলতে পারে না। এই এলাকায় বিস্তর অবড়ো জনজাতিরও বাস। তাদের অধিকার রক্ষা করতে হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement