আশা ছিল আলোচনায় সমস্যার সমাধান হবে। রাজ্য সভাপতির নির্বাচন-সহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলি সহজেই নেওয়া যাবে। কিন্তু রাজ্য কর্মসমিতির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের প্রথম দিন হাজিরই হলেন না অর্ধেকের বেশি জনপ্রতিনিধি। গরহাজির রাজ্যের ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কয়েকজনও। দু’দিনের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের প্রথম দিনে তাই কোনও সিদ্ধান্তই নিতে পারলেন না বিহার বিজেপির কর্তারা।
যদিও দলের নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীলকুমার মোদীর দাবি, ‘‘দু’দিনের বৈঠকে অনেকেই হাজির হয়েছেন। অনেকে ব্যস্ত তাই আসতে পারেননি। আগামী কাল আসবেন। সকলেই কর্মসমিতির সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন।’’ কিন্তু পটনা সাহিবের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা, বেগুসরাইয়ের সাংসদ ভোলা সিংহ থেকে ডজন দুয়েক বিধায়কের হাজির না হওয়া নিয়ে কিছু বলেননি। দু’দিনের এই কর্মসমিতি বৈঠকে বিহার বিজেপির অনৈক্যের চেহারাটাই সামনে এল।
বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পরে বিহার বিজেপির নেতাদের নিয়ে বেশ কয়েকবার রাজ্য দফতরে বৈঠক করেছিলেন শীর্ষ নেতারা। সেখানে পরস্পরের প্রতি দোষারোপ ছাড়া কিছুই হয়নি। নির্বাচনের ছ’মাস পরে সুশীল মোদীর সরকারি বাসভবন ১ নম্বর পোলো রোডে রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সুশীল মোদী ছাড়াও কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহ, রামকৃপাল যাদব, বিরোধী দলনেতা প্রেম কুমার, রাজ্য সভাপতি মঙ্গল পাণ্ডে, নন্দকিশোর যাদব, গোপালনারায়ণ সিংহরা হাজির ছিলেন। কিন্তু সেই বৈঠকেই রাজ্য থেকে জেতা দলের ২২ সাংসদের বেশির ভাগকেই দেখা যায়নি। হাজির ছিলেন না সদ্য নির্বাচিত ৫৩ জন বিধায়কের অনেকেই। কেন হাজির ছিলেন না তাঁরা! দলীয় সূত্রেই খবর, পটনা সাহিবের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ফোনে শত্রুঘ্নের ব্যক্তিগত সচিব বলেন, ‘‘আমন্ত্রণ পেলে স্যারের তো হাজির না থাকার কোনও কারণ ছিল না।’’ বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য এই বক্তব্যকে আমল দিতে চাননি। তবে বেগুসরাইয়ের সাংসদ ভোলা সিংহ বলেন, ‘‘দলের সাংগঠনিক নির্বাচন চলছে। কিন্তু আমরা কিছুই জানি না। কাগজে-কলমে গোটা বিষয়টি সেরে ফেলা হচ্ছে। আর কর্মসমিতির কথা বাদ দিন। সেখানে আমাকে ডাকাই হয়নি।’’ বৈঠকে হাজির ছিলেন না কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ, রাজীবপ্রতাপ রুডি, বিহারের ভারপ্রাপ্ত ভূপেন্দ্র যাদব, ধর্মেন্দ্র প্রধানের মতো নেতারা। এমনকী বক্সারের সাংসদ অশ্বিনী চৌবে ও আরার সাংসদ আর কে সিংহের মতো নেতাও বৈঠকে হাজির হননি। নাম না প্রকাশ করার শর্তে বৈঠকে গরহাজির এক বিধায়ক বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিহারকে আর আগের মতো গুরুত্ব দিচ্ছেন না। নির্বাচনের পরাজয়ের জন্য দলের রাজ্য নেতৃত্বকেই কাঠগ়ড়ায় তুলেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলের অনৈক্যের বিষয়টি তাঁরা জানেন। নিজেদের মধ্যে বসে মিটিয়ে নিতেও বলেছিলেন। কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছে না। কর্মসমিতির বৈঠকে তা সামনে এল।’’