ফাইল চিত্র
করোনা-সংক্রমণে মারা যাননি, পাকিস্তানি সেনা বাহিনীর নির্দেশে গোপন অভিযানে মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে লন্ডনের একটি প্রভাবশালী সংবাদপত্র।
ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্র উদ্ধৃত করে রবিবার সংবাদপত্রটিতে এই খবর প্রকাশ হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, করাচিতে কঠোর নিরাপত্তায় মোড়া ডনের আড্ডায় কয়েক মাস আগে এই অভিযানটি চালিয়েছিল সেনা বাহিনীর চিকিৎসক শাখা। যে ভাবে হঠাৎ একের পর এক অঙ্গ বিকল হয়ে দাউদের মৃত্যু হয়েছে, তা থেকে মনে হয়েছে— সম্ভবত কোনও বিষাক্ত রাসায়নিক ইঞ্জেকশন করা হয়েছিল তার দেহে। শনিবার দাউদের মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পরে তার ভাই আনিস ইব্রাহিম মুম্বইয়ের কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে ছোট্ট বার্তায় জানিয়েছে, ‘ভাই’ (দাউদ) এবং তার ডান হাত ছোটা শাকিল সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে। লন্ডনের সংবাদপত্রটিকে গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর নির্দেশেই আনিস এই বার্তা পাঠিয়েছে। কারণ দাউদের পরিবারকে ডনের মৃত্যুসংবাদ অস্বীকার করার নির্দেশই দিয়েছে আইএসআই।
লন্ডনের সংবাদপত্রটি জানিয়েছে, ২০১৭ থেকে দাউদকে ঝেড়ে ফেলতে তৎপর হয় পাকিস্তানে শাসন ক্ষমতার অন্যতম নিয়ন্ত্রক সেনা বাহিনীর একাংশ। তখন থেকেই দাউদকে হত্যার পরিকল্পনা সাজানো শুরু হয়। তাদের সূত্রও জানিয়েছে, মূলত মার্কিন চাপেই এই সিদ্ধান্ত। বহু মার্কিন নাগরিককে হত্যায় অভিযুক্ত দাউদকে করাচি-ছাড়া করার জন্য পাকিস্তানের ওপরে চাপ দিচ্ছিল আমেরিকা। ভারতও দাউদ ও পশ্চিম এশিয়ার নানা জায়গায় থাকা তার আত্মীয় স্বজনদের বিষয়ে মার্কিন এবং অন্য কয়েকটি দেশের গুপ্তচর সংস্থাকে সমানে গোয়েন্দা রিপোর্ট সরবরাহ করে গোপন অভিযানের জন্য চাপ বাড়াচ্ছিল। অ্যাবটাবাদের আড্ডায় মার্কিন অভিযানে বিন লাদেনের মৃ্ত্যুর পরে যে ভাবে পাকিস্তানের ভাবমূর্তি ধাক্কা খেয়েছে, তার পুনরাবৃত্তি চায়নি বলেই পাক সেনা বাহিনী দাউদের হাত থেকে ‘নিষ্কৃতির’ পরিকল্পনা করেছিল বলে গোয়েন্দা সূত্র লন্ডনের সংবাদপত্রটিকে জানিয়েছে। তাই তারা দাউদকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অপরাধ জগতে তার প্রভাব আটকাতে মৃত্যুসংবাদ গোপনের কৌশল নেয়।
তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তা রবিবার আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, দাউদের মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট খবর তাঁদের কাছে নেই। ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর পর থেকেই ভারত, আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন দাউদকে আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করে আদালতে হাজির করার জন্য পাকিস্তানের ওপর চাপ দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ডনের মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পাকিস্তান লাভবান হতে পারে বলে মনে করছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ভারত সরকার মনে করে— দাউদ বেঁচে আছে এবং বিশ্ব জুড়ে নিজের অপরাধ-সাম্রাজ্য দিব্যি পরিচালনা করে চলেছে।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে সংঘর্ষে নিহত পাঁচ জঙ্গি