ফাইল চিত্র।
গো মাংস বিতর্কের জেরে চরম সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে অজমেরের খাজা মইনুদ্দিন চিস্তির দরগায়।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির স্বার্থে মুসলিমদের গোমাংস ছাড়তে বলেছিলেন দরগার প্রধান জয়নুল আবেদিন খান। গত কাল তাঁর এই বিবৃতির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জয়নুলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন ভাই সৈয়দ আলাউদ্দিন আলিমি। এমনকী, দিওয়ান বা দরগা প্রধানের পদ থেকে জয়নুলকে সরিয়ে দিলেন সৈয়দ আলাউদ্দিন। তাঁর দাবি, এখন থেকে তিনিই দরগা প্রধানের দায়িত্ব সামলাবেন। শুধু তাই নয়, বড় ভাই জয়নুলকে ‘অ-মুসলিম’ আখ্যা দিয়ে তাঁকে দরগায় ঢুকতে না দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি। আলাউদ্দিনের দাবি, এই সিদ্ধান্তে তাঁদের পরিবারের অন্য সদস্যদের সম্মতি রয়েছে।
তবে এর পরেই জয়নুল আবেদিন খান জানিয়ে দিয়েছেন, দরগা প্রধানের পদে তিনি বসেছেন খোদ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। ফলে ওই পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার অধিকার কারও নেই। তবে পরবর্তী সময়ে দরগা প্রধান হিসেবে তাঁর বড় ছেলে সৈয়দ নাসিরুদ্দিন চিস্তিই দায়িত্ব পেতে পারেন বলে জানিয়ে দেন জয়নুল। তাঁর মন্তব্য, ‘‘দিওয়ান নিয়োগের পদ্ধতি রয়েছে। বিবৃতি দিয়েই কাউকে ওই পদ থেকে সরানো যায় না।’’
আরও পড়ুন: কোমা থেকে ফিরলেন চিতা
অজমেরের দরগার দিওয়ানের পদটি মইনুদ্দিন চিস্তির পরিবারের সদস্যরা বংশানুক্রমে পেয়ে থাকেন। দিওয়ান যদিও দরগার পরিচালন ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না, তবে পরিচালন কমিটির পক্ষ থেকে মাসিক ভাতা পান তিনি। ১৯৮৭ সাল থেকেই দরগা প্রধান বা দিওয়ানের পদে জয়নুল আবেদিন খান। এখন নিজেকে দরগা প্রধান হিসেবে তুলে ধরে তাঁর ভাইয়ের দাবি, দিওয়ানের পদে বসে ভাতা নেবেন না তিনি। তবে জয়নুলের বক্তব্যকে সমর্থন করেছে বিজেপি। ফলে নয়াদিল্লি ও জয়পুরে সরকার পাশে থাকলে জয়নুলকে সরানোর বিষয়টি অত সহজে হবে কিনা, সেটাও এখন দেখার।
গত কালই খাজা মইনুদ্দিন চিস্তির দরগার প্রধান জয়নুল আবেদিন খান দরগার অনুষ্ঠান থেকে মন্তব্য করেন, ‘‘আমি ও আমার পরিবার শপথ নিচ্ছি, জীবনে আর কোনও দিন গোমাংস ছুঁয়ে দেখব না।’’ দেশের সর্বত্র গোমাংস বিক্রি বন্ধের পক্ষে সওয়াল করেন তিনি। প্রশ্ন তোলেন তিন তালাক প্রথার অপব্যবহার নিয়েও। আর আজ সৈয়দ আলাউদ্দিনের দাবি, জয়নুল যা বলেছেন, তা মুসলিম-বিরোধী। ধর্মশাস্ত্রের পন্ডিতদের সঙ্গে কথা বলেই তিনি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।