প্যাঁচে: আমেরিকা থেকে ফিরে দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে বিমানবন্দরে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। রবিবার বেঙ্গালুরুতে। পিটিআই
কর্নাটকে কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকারের আয়ু আর কত দিন, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই আজ শাসক শিবিরের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল। উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকে কাঠগড়ায় তুলেছেন জেডিএস প্রধান এইচ ডি দেবগৌড়া। আজ সন্ধেয় আমেরিকা থেকে ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। ফিরেই দলের বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি।
পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে বিজেপি। গৈরিক শিবিরের অবশ্য দাবি, সরকার সঙ্কটে পড়ার পিছনে তাদের কোনও হাত নেই। যদিও পদত্যাগী বিধায়কেরা যে বিমানে মুম্বই গিয়েছেন, সেই বিমানে ছিলেন রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ রাজীব চন্দ্রশেখর। ওই খবর সামনে আসার পর কংগ্রেস পরিস্থিতির জন্য বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছে।
কংগ্রেসের আট জন এবং জেডিএসের পাঁচ জন বিধায়ক গত কাল স্পিকার রমেশ কুমারের দফতরে গিয়ে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে আসেন। কাল এই ইস্তফার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন স্পিকার। ১৩ বিধায়কের পদত্যাগে অনিশ্চয়তার মুখে কুমারস্বামীর সরকার। সঙ্কট সামাল দিতে আজ দফায় দফায় বৈঠক করেন শাসক জোটের দুই শরিক। দেবগৌড়ার সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেসের ‘মুশকিল আসান’ বলে পরিচিত ডি কে শিবকুমার। ওই বৈঠকের পর দেবগৌড়া সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘এই রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য দায়ী সিদ্দারামাইয়া। যে বিধায়কেরা পদত্যাগ করেছেন, তাঁরা ওঁর (সিদ্দারামাইয়া) অনুগামী।’’
সূত্রের খবর, শিবকুমারের সঙ্গে বৈঠকেও সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। ওই সূত্রটি জানিয়েছে, শিবকুমারকে আজ দেবগৌড়া বলেছেন, ‘‘সব কিছুর পিছনে সিদ্দারামাইয়া। জোট সরকার তৈরির পর থেকেই উনি এই কাজ করছেন। ওঁকে আমি আবার মুখ্যমন্ত্রী হতে দেব না। আপনারা (কংগ্রেস) যদি ওঁকে মুখ্যমন্ত্রী করার প্রস্তাব দেন, তা হলে আমি সমর্থন প্রত্যাহার করব।’’ যদিও জেডিএস নেতা তথা রাজ্যের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী জি ডি দেবগৌড়া বলেন, ‘‘পদত্যাগী বিধায়ক এইচ বিশ্বনাথের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি জানিয়েছেন, সিদ্দারামাইয়াকে মুখ্যমন্ত্রী করলে বা কংগ্রেস ও জেডিএসের অন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রী হলে তিনি ফিরে আসবেন।’’ সূত্রের খবর, শিবকুমার সঙ্গে বৈঠকে দেবগৌড়া বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস যদি মল্লিকার্জুন খড়্গেকে মুখ্যমন্ত্রী করার প্রস্তাব দেয়, তা হলে বিবেচনা করব।’’ এর মধ্যেই খবর ছড়িয়ে পড়ে খড়্গে মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন। যদিও তিনি বলেছেন, ‘‘এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। অ-বিজেপি সরকারগুলির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বিজেপি।’’
কর্নাটকের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল আজ প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন। পদত্যাগী বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করন কংগ্রেস নেতারা। কর্নাটকের বিজেপি প্রধান বি এস ইয়েদুরাপ্পা আজ বলেছেন, ‘‘আমরা সন্ন্যাসী নই। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। পদত্যাগীদের বিষয়ে স্পিকার সিদ্ধান্ত নিন, তার পর পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব।’’