চলতি সপ্তাহেই পশ্চিমবঙ্গের হাতে দেউচা পাঁচামি কয়লা খনি আনুষ্ঠানিক ভাবে তুলে দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী তৃণমূল সাংসদদের আজ এ কথা জানিয়েছেন।
কেন্দ্র পরিকল্পনামাফিক ওই হস্তান্তরে দেরি করছে— এই অভিযোগ জানাতে আজ প্রহ্লাদের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদেরা। বৈঠকে প্রহ্লাদ জানান, চলতি সপ্তাহে ওই কয়লাখনির হস্তান্তর (অ্যালটমেন্ট অর্ডার) সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ মিটিয়ে ফেলা হবে। রাজ্য সরকারের মতে, এর ফলে ধাপে ধাপে
বীরভূমের ওই এলাকায় প্রায় কুড়ি থেকে বাইশ হাজার কোটি লগ্নি হওয়ার আশা রয়েছে। কাজ পাবেন বহু মানুষ।
ভারতের বৃহত্তম এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেউচা পাঁচামি কয়লা ব্লকে প্রায় ২১০২ মিলিয়ন টন কয়লা মজুত রয়েছে। শুরুতে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি বিহার, কর্নাটক, পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং কেন্দ্রীয় একটি সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে যৌথ উদ্যোগে ১২.৩১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা থেকে কয়লা তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরে অন্য রাজ্যগুলি পিছিয়ে এলে ২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গের হাতে ওই
কয়লাখনি তুলে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। তার পরেও চূড়ান্ত ছাড়পত্রের জন্য বিষয়টি ঝুলে রয়েছে প্রায় এক বছর।
আজ তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মণীশ গুপ্ত বলেন, ‘‘কেন্দ্রের ঢিলেমি নিয়ে অভিযোগ জানাতেই কয়লামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূল সাংসদেরা। তখনই প্রহ্লাদ জোশী আশ্বাস দিয়েছেন, চলতি সপ্তাহেই হস্তান্তর সম্পর্কিত যাবতীয় কাজ মিটিয়ে ফেলা হবে। যে পরিমাণ কয়লা উত্তোলন হবে, তার উপরে রাজস্ব ভাগাভাগি করার শর্তে ওই ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র। প্রতি মেট্রিক টনে রাজ্যকে ৪০০ টাকা করে ‘কয়লা সেস’ দিতে হবে কেন্দ্রকে।’’
রাজ্য সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই খনি থেকে কয়লা তুলবে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। মণীশবাবুর মতে, পরিকাঠামো গড়ে ওই খনি থেকে কয়লা তুলতে আরও ২-৩ বছর সময় লাগবে। তবে প্রকল্প চালু হয়ে গেলে আগামী ৫০ বছরের জন্য রাজ্যের কয়লার সমস্যা মিটে যাবে। পাশাপাশি অন্য রাজ্যকে কয়লা বিক্রি করতে পারবে পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু ওই প্রকল্পের জন্য যে কয়েক হাজার একর জমির
প্রয়োজন হবে, তা কোথা থেকে আসবে, তা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যায় যেতে চাননি তৃণমূল সাংসদরা। বরং তাঁদের দাবি, জোর করে কোনও জমি নেওয়া হবে না। উপযুক্ত পুনর্বাসন প্রকল্পের মধ্য দিয়েই জমি অধিগ্রহণ করা হবে।