ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্যগুলির একাংশের বক্তব্য, দেশে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই। বণিকসভা সিআইআই-এর বার্ষিক সম্মেলনে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর কিন্তু জানালেন যে, দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে দেশে অক্সিজেনের চাহিদা আট-নয় গুণ বেড়ে গিয়েছিল।
বিদেশমন্ত্রী আজ বলেন, ‘‘প্রথমে গোটা দুনিয়া আমাদের দেখে এই ভেবে বিস্মিত হয়েছিল যে, এই তীব্র অতিমারির মুখে একটা দেশ এত বেশি সংক্রমণ কী ভাবে সামাল দেবে? দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে পরিস্থিতি আঁচ করাই কঠিন হয়ে পড়েছিল। মূলত ভাইরাসের ডেল্টা প্রজাতিই ছিল তার কারণ। অক্সিজেনের চাহিদাও বেড়ে গিয়েছিল আট-নয় গুণ।’’ জয়শঙ্কর জানান, সংক্রমণের প্রথম ঢেউয়ের সময়ে ভারত যেমন বিভিন্ন দেশকে সাহায্য করেছিল, দ্বিতীয় ঢেউয়ে বহু দেশ একই ভাবে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে ওষুধ, অক্সিজেনের মতো উপকরণ নিয়ে।
এ দিকে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া আজ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর মুখ্য বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথনের সঙ্গে বৈঠক করেন। ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধকের জন্য হু-এর ছাড়পত্রের বিষয়টি নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা হয়। এই মাসেই হাঙ্গেরি থেকে ‘গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাক্টিস’ (জিএমপি) শংসাপত্র পেয়েছে দেশীয় সংস্থাটি। হু-এর সবুজ সঙ্কেত এলে কোভ্যাক্সিন-গ্রহীতাদের বিদেশযাত্রা সহজ হবে।
টিকাকরণের পরেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাঁরা কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের চিহ্নিত করতেই আগামী সপ্তাহে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম আনার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র। বিশেষ সূত্র উদ্ধৃত করে একটি চ্যানেলের দাবি, ওই প্ল্যাটফর্মটি জনসমক্ষেই থাকবে। টিকাকরণের পরেও কত জন কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁরা কেমন থাকছেন, কত জনকে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন পড়ছে, কেউ মারা গিয়েছেন কি না— এ সব তথ্যই থাকবে ওই প্ল্যাটফর্মে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সূত্রটির কথায়, ‘‘টিকাকরণের পরেও যাঁরা সংক্রমিত হচ্ছেন, রাজ্যগুলির কাছ থেকে তাঁদের নমুনা নিয়ে জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হচ্ছে, যাতে ভাইরাসের উপরে নজরদারি করা যায়। এখনও পর্যন্ত এমন সিকোয়েন্সিংয়ে ভাইরাসের কোনও নতুন প্রজাতি বা চরিত্র বদলের কথা নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি। দু’সপ্তাহে আরও তথ্য প্রকাশ্যে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।’’
টিকাকরণ সত্ত্বেও যাঁরা সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদের খুব সামান্য অংশকেই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্র জানিয়েছে। এখনও পর্যন্ত টিকাপ্রাপ্ত কোভিড রোগীদের শরীরে সংক্রমণের উপসর্গ খুবই মৃদু বলে দেখা গিয়েছে। সূত্রের মতে, এই কারণেও নয়া প্ল্যাটফর্মটিকে সর্বসাধারণের সামনে রাখা হবে, যাতে মানুষ টিকা নিতে উৎসাহ বোধ করেন। সম্পূর্ণ টিকাকরণের পরেও সংক্রমিতদের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য কেরলের কাছে চেয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তা গত কালই দাবি করেছেন, কেরলে এমন সংক্রমিতের সংখ্যা ৪০ হাজারেরও বেশি। তবে কেরলের স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার বক্তব্য, সংখ্যাটা পাঁচ-সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি নয়।