National News

‘আমার বুড়ি মা পালাতে পারেনি’

বাড়ির জ্বলন্ত তিনতলা থেকে শুধু নড়তে পারেননি সলমনির ৮৫ বছরের মা আকবরি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:১১
Share:

ছবি: পিটিআই।

ভরদুপুরে দুধ কিনতে বেরিয়ে মহম্মদ সইদ সলমনি খবর পেলেন, তাঁর বাড়ি জ্বলছে। শ’খানেক সশস্ত্র লোক তছনছ করে ফেলছে তাঁর পাড়া, তাঁর বাড়ি— যার নীচের দু’টো তলায় দর্জির দোকান। গত কাল ছোট ছেলের ফোনে সলমনি এ-ও জানতে পারেন, তাঁর পরিবার এবং দোকানের ৬ কর্মী ছাদে উঠে দরজা বন্ধ করে রেখেছেন।

Advertisement

বাড়ির জ্বলন্ত তিনতলা থেকে শুধু নড়তে পারেননি সলমনির ৮৫ বছরের মা আকবরি। দিল্লির খাজুরি খাস থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে গামরি এক্সটেনশনের বাড়িতে ফিরে সলমনি হাহাকার করছেন, ‘‘আমার বুড়ি মা পালাতে পারল না। আমি থাকলে মাকে ছাদে নিয়ে যেতাম।’’ আগামিকাল মায়ের দেহ মেরঠে নিয়ে গিয়ে সমাহিত করবেন তিনি। নিঃস্ব, বিধ্বস্ত সলমনির পরিবারে ঠিক পরের দিনই এসেছে নবজাতক। হাসপাতালে কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন সলমনির পুত্রবধূ।

চাঁদবাগের মহম্মদ জুবের নিজের ছবি দেখেই কেঁপে উঠছেন। গত মঙ্গলবার দেশের প্রায় সমস্ত কাগজের প্রথম পাতায় ছিল জুবেরের ছবি। ছবিতে দেখা যায়, জুবের রাস্তায় পড়ে। আর একটা ভিড় উন্মত্তের মতো লাঠি আর রডপেটা করছে তাঁকে।

Advertisement

আরও পড়ুন: রাজধানী যখন জ্বলছে, পুলিশ তখন আব্বুলিশ!

সোমবার সকালে নমাজ পড়তে গিয়েছিলেন জুবের। তার পরে বিয়েবাড়ি থেকে স্ত্রীকে নিয়ে ফেরার কথা ছিল বাড়িতে। গরিব দিনমজুর জুবের তিন শিশুসন্তানের জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছিলেন খানিকটা হালুয়া আর পরোটা। হঠাৎ একটা ভিড় ঘিরে ধরে পেটাতে শুরু করে তাঁকে। জুবের বলছিলেন, ‘‘যত মিনতি করছিলাম, তত মার খাচ্ছিলাম। ওরা ধর্ম তুলে কটূক্তি করছিল, বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রের নামও নিচ্ছিল।’’ জিটিবি হাসপাতালে জ্ঞান ফেরার পরে ভাইয়েরা তাঁকে নিজেদের ইন্দ্রপুরীর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রেখেছেন। জুবের বলছেন, ‘‘জানি না বৌ-বাচ্চাদের আর দেখতে পাব কি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement