কয়েক দিন ধরেই অশান্ত কাশ্মীর। সেই সুযোগে আজ ফের কাশ্মীরের স্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল করলেন পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জামাত উদ দাওয়া তথা লস্কর ই তইবার নেতা হাফিজ সইদ। পাকিস্তানি সেনা ও তাঁর সংগঠন কাশ্মীরিদের ‘জেহাদে’ সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন লস্কর নেতা।
বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানির সভায় পাকিস্তানি পতাকা ও ভারত-বিরোধী স্লোগানের জেরে এখন অশান্ত ভূস্বর্গ। সেই সময়েই সইদের এই মন্তব্যে পাক মদতের বিষয়টি আরও স্পষ্ট হল বলে মনে করছে দিল্লি। নরেন্দ্র মোদী সরকারের তরফে এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। কারণ, সইদ পাক প্রশাসনের জড়িত থাকার বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে ইসলামাবাদকেই অস্বস্তিতে ফেললেন বলে মনে করছে কেন্দ্র।
কাশ্মীরের ত্রাল এলাকায় সেনার গুলিতে দু’জন নিহত হওয়া নিয়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা। সেই বিষয়টি নিয়েও পাকিস্তানের ফৈজলাবাদে একটি সভায় সরব হয়েছেন সইদ। গোয়েন্দাদের মতে, উপত্যকার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েই যে লস্কর প্রধান এগোচ্ছেন তা এ থেকেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পাক সেনার পাশে থাকার পাশাপাশি নওয়াজ শরিফ সরকারকে কটাক্ষ করেছেন সইদ। তাঁর কথায়, ‘‘কাশ্মীরে ভারতীয় অত্যাচার নিয়ে পাক সরকারের চুপ করে থাকাটা ঠিক নয়। নওয়াজ শরিফ সরকারের উচিত অন্তত এই বিষয়ে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করা।’’
কৌশলগত কারণেই হাফিজ প্রশ্নে আগ বাড়িয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ কেন্দ্র। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের মতে, ভারতের লক্ষ্য দু’দেশের মধ্যে শান্তিপ্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। মোদী সরকারের দশ মাসেই ভারত-পাক শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। বন্ধ হয়েও ফের চালু হয়েছে আলোচনা। পাকিস্তানের মোল্লাতন্ত্র, সেনা ও গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের একাংশ এই আলোচনা বন্ধ করে দিতে বদ্ধপরিকর। সইদকে সেই কাজেই ব্যবহার করা হচ্ছে বলে মনে করছে সাউথ ব্লক। কিন্তু ওই ফাঁদে আর পা দিতে রাজি নয় দিল্লি।
মার্কিন প্রশাসনও হাফিজ সইদকে গ্রেফতার করার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে ইসলামাবাদের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু মোল্লাতন্ত্র-সেনা-আইএসআই চক্রের চাপে সেই ঝুঁকি নিতে পারছে না নওয়াজ শরিফ সরকার। কাশ্মীরে অশান্তিতে পাক মদতের কথা স্পষ্ট করে দিয়ে সইদ আমেরিকার কাছেও ফের মুখ পোড়ালেন বলে মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক। তাতে লাভ হবে দিল্লিরই।
তাই সইদ যতই হুঙ্কার দিন, আপাতত মুখে কুলুপ দিল্লির।