Delhi Municipal Corporation

দিল্লির পুরভোটের হাওয়ায় ২০২০-র সেই হিংসার কথা

দিল্লির জনসংখ্যার প্রায় ১৩ শতাংশ মুসলিম। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে মুসলিমদের জনসংখ্যা প্রায় ৩০ শতাংশ। খোলা নর্দমা, ভাঙা রাস্তা, আবর্জনার স্তূপ, পানীয় জলের অভাব এলাকার বাসিন্দাদের নিত্যসঙ্গী।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:৪৮
Share:

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে হিংসার পরে এই প্রথম ভোট। প্রতীকী ছবি।

বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল ওরা। মুস্তফাবাদের আজ় মহম্মদ প্রাণ বাঁচাতে পরিবার নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিলেন। দিনমজুরির আয় সম্বল। তাই ধারদেনা করে বাড়ি মেরামত করিয়েছেন।

Advertisement

এক দিকে শিবপুরী, বৃজপুরী। অন্য দিকে মুস্তফাবাদ। এক দিকে হিন্দুদের সংখ্যাধিক্য। অন্য দিকে মুসলিমদের। রবিবার দিল্লি পুরসভায় ভোটগ্রহণ। শুক্রবার প্রচারের শেষ দিনে আম আদমি পার্টির রোড-শো দেখছিলেন আজ় মহম্মদ। তার পরেই হতাশ কণ্ঠে বললেন, ‘‘দিল্লির আম আদমি পার্টি, কেন্দ্রের বিজেপি, কোনও সরকারের থেকেই কানাকড়ি ক্ষতিপূরণ পাইনি।’’

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে হিংসার পরে এই প্রথম ভোট। গত ১৫ বছর ধরে দিল্লির তিনটি পুরসভায় বিজেপি ক্ষমতায়। এ বার তিনটি পুরসভা জুড়ে একটিই দিল্লি পুরসভা তৈরি হয়েছে। তার পরে এই প্রথম দিল্লিতে পুরভোট। প্রথম ভোট ২০২০-র হিংসার পরেও।

Advertisement

সিএএ-বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু হওয়া ফেব্রুয়ারির সেই হিংসার সময় মুস্তফাবাদ ও শিবপুরী-বৃজপুরীর মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া বসেছিল। এখন তিনটি পুরসভা মিলে একটি পুরসভা তৈরি হয়েছে। ২৭২টি ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস করে ২৫০টি ওয়ার্ড তৈরি হয়েছে। ফলে বৃজপুরীর কিছুটা অংশ মিশে গিয়েছে মুস্তফাবাদের সঙ্গে। দিল্লির সরকারের সঙ্গে দিল্লির পুরসভাও দখল করতে মরিয়া অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দল বলছে, আম আদমি পার্টির হাতে সরকার ও পুরসভা দুই-ই এলে রাস্তা, পানীয় জল, নিকাশির সমস্যা থাকবে না।

দিল্লির জনসংখ্যার প্রায় ১৩ শতাংশ মুসলিম। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে মুসলিমদের জনসংখ্যা প্রায় ৩০ শতাংশ। খোলা নর্দমা, ভাঙা রাস্তা, আবর্জনার স্তূপ, পানীয় জলের অভাব এলাকার বাসিন্দাদের নিত্যসঙ্গী। রাস্তা-জল-নর্দমার সঙ্গে ভোটের হাওয়ায় উড়ছে ২০২০-র ফেব্রুয়ারির হিংসার কথাও। ওই হিংসাতেইজড়িত থাকার অভিযোগে আম আদমি পার্টির স্থানীয় পুরপিতা তাহির হুসেন এখনও জেলে। কিন্তু মুস্তফাবাদের বাড়িতে বাড়িতে যখন হামলা চলছে, তখন কেজরীওয়াল বা তাঁর দল হাত গুটিয়ে বসে ছিল কেন, সেই প্রশ্নও উঠছে। আম আদমি পার্টির নেতারা জবাবে বলছেন, দিল্লির পুলিশ তো কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের হাতে। বিজেপিই হিংসায় উস্কানি দিয়েছিল।

আপ, বিজেপি, কংগ্রেসের সঙ্গে এমআইএম, সিপিএমও ভোটে নেমেছে। মুস্তফাবাদের একটি ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী জ়িনত জ়হরার হয়ে শুক্রবার প্রচার করেছেন পলিটবুরো নেত্রী বৃন্দা কারাট। সিপিএমের দাবি, হিংসার পরে সিপিএমই সীমিত শক্তি নিয়ে আমজনতাকে ত্রাণ, ক্ষতিপূরণ, আইনি সাহায্য করেছে। আজ় মহম্মদ বলেন, ‘‘অনেকে আসাদুদ্দিন ওয়েসির দলের থেকেও সাহায্য পেয়েছেন। তবে ভোটে লড়াই হবে আম আদমি পার্টি ও বিজেপির মধ্যেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement