অরবিন্দ কেজরীবাল মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরে আট মাস হয়ে গেল বিধানসভা জিইয়ে রাখা হয়েছে, কিন্তু এখনও বিকল্প সরকার গঠনের রাস্তা খুলল না দিল্লিতে। বরং বিধানসভা ভেঙে দিয়ে নতুন ভোট করা নিয়ে একসুর এখন বিজেপি, কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি। উপরাজ্যপাল নজীব জঙ্গের ডাকা বৈঠকে আজ তা-ই জানিয়ে এল সকলে। উপরাজ্যপাল বিবৃতিতে জানিয়েছেন, সব দলই সরকার গড়তে অক্ষমতা প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে রিপোর্ট দেবেন তিনি।
দিল্লিতে সরকার গড়া নিয়ে গড়িমসি দেখে সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি কড়া সমালোচনা করেছে কেন্দ্রের। এ দিকে কেজরীবালরা বারবার ভোট করানোর দাবি তুলে যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে শীর্ষ আদালতে পরবর্তী শুনানির আগেই রাজনৈতিক দলগুলির মত নেওয়া প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল উপরাজ্যপালের কাছে। তাই আজ সব দলকে ডেকে দিল্লিতে সরকার গড়া নিয়ে মতামত নেন তিনি।
দিল্লিতে বিজেপি সব থেকে বড় দল হলেও সরকার গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা তাদের কাছে নেই। মাস কয়েক আগে এক বার সরকার গড়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। কেজরীবাল তখন বিধায়ক কেনাবেচার অভিযোগ তোলেন। এমন অভিযোগের নিশানা হতে রাজি ছিলেন না মোদী। গোড়া থেকেই তিনি জোড়াতালির সরকার গড়ার বদলে নতুন করে মানুষের রায় নেওয়ার পক্ষপাতী। কিন্তু বিজেপির সিংহভাগ বিধায়ক এত অল্প সময়ে ফের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। বিশেষ করে কেজরীবাল যখন ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলছেন।
এ অবস্থায় রাজ্য বিজেপির যাঁরা নির্বাচনের পক্ষে ছিলেন, তাঁরা বাকিদের বোঝানোর চেষ্টা করেন এক বছর আগে কেজরীবালের যে ক্যারিশমা ছিল, তাতে ক্ষয় ধরা শুরু হয়েছে। তার উপর লোকসভা নির্বাচনে দিল্লির ৭টি আসনেই বিজেপি জয়ী। মহারাষ্ট্র, হরিয়ানায় সরকার গড়ার পর মোদীর পক্ষে যে হাওয়া রয়েছে, তা কাজে লাগিয়ে বিজেপি দিল্লিতেও একার ক্ষমতায় সরকার গড়তে পারবে। এবং সেই মোতাবেকই বিজেপি দিল্লিতে সরকার গড়ার ব্যাপারে তাদের অক্ষমতা জানিয়ে এসেছে আজ।
আগামী কয়েক মাসে ফের ভোট হলে কংগ্রেসের বাড়তি লাভ নেই। কিন্তু বাকি সব দলই যখন ভোটের কথা বলছে, সেই সময় কংগ্রেসেরও সেই সুরে কথা বলা ছাড়া উপায় নেই। কারণ, অতীতে আপকে সমর্থন করলেও কংগ্রেস অন্তত বিজেপিকে সরকার গড়ার জন্য বলতে পারে না। বরং তারা আশায়, আপের ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসিয়ে যদি নিজেদের জমি কিছুটা ফেরত পাওয়া যায়।