উমর খলিদ
দু’বছর আগের দিল্লি দাঙ্গা মামলায় জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রনেতা উমর খলিদের জামিনের আর্জি খারিজ করল দিল্লির করকরদুমা আদালত। অতিরিক্ত সেশনস জজ অমিতাভ রাওয়ত এ দিন উমরের জামিনের আর্জি খারিজ করেন।
২০২০-র ফেব্রুয়ারিতে উত্তর-পূর্ব দিল্লি দাঙ্গার যড়যন্ত্রকারী হিসেবে উমরের নামে অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ-সহ একাধিক ধারায় মামলা করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণে থাকা দিল্লি পুলিশ।
করকরদুমা আদালতে শুনানির সময় উমরের তরফে আইনজীবীরা বলেন, প্রাক্তন ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা প্রমাণ করার মতো তথ্য সরকারপক্ষের হাতে নেই। উমরের তরফে সিনিয়র অ্যাডভোকেট ত্রিদীপ পৈস বিচারককে বলেন, দিল্লি দাঙ্গা মামলায় উমরের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলি প্রমাণ করার মতো যথেষ্ট তথ্য সরকারপক্ষের হাতে নেই। ওই মামলায় উমরকে নির্দোষ দাবি করে ত্রিদীপ পৈস আদালতে জানান, প্রাক্তন ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে আনা বেশির ভাগ অভিযোগের কোনও প্রমাণই নেই। বেশির ভাগ অভিযোগই কাল্পনিক এবং তার সারবত্তা বা প্রমাণ কিছুই নেই বলেও সওয়াল করেন তিনি। পৈসের কথায়, ‘‘সরকারপক্ষের কল্পনা এ সব। ওরা প্রথমে একটা গল্প তৈরি করতে চায় এবং তার পরে সেই গল্পকে সম্পূর্ণ করার জন্য প্রমাণ তৈরি করতে চায়।’’ পাল্টা সওয়ালে সরকারপক্ষের আইনজীবীরা জানান, উমরের উদ্দেশ্য ছিল সরকার ফেলে দেওয়া, সংসদের অধিকার খর্ব করা।
এ দিন করকরদুমা আদালতের রায়ের পরে উমরের জামিনের জন্য উচ্চতর আদালতে আর্জি জানানো হবে বলে সূত্রের খবর।
২০২০-র দিল্লি দাঙ্গায় কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে থাকা দিল্লি পুলিশ এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, দাঙ্গা শুরুর কয়েক দিন আগে বিজেপির একাধিক নেতা-মন্ত্রী সরাসরি উস্কানিমূলক বক্তৃতা দিলেও তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা আজও নেওয়া হয়নি। এমনকি ওই সময় দিল্লিতে একাধিক বিজেপি-ঘনিষ্ঠ ধর্মগুরু সরাসরি হিংসার ডাক দিলেও অমিত শাহের পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। অন্য দিকে যারা কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের আনা এনআরসি-সিএএ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের নানা ভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। সেই সূত্রেই দিল্লির দাঙ্গায় উমর খলিদ-সহ একাধিক আন্দোলনকারীর নাম যোগ করা হয়েছে।