২৫ বছরের বাদলের এই কাহিনি আপাতত সংবাদ শিরোনামে। প্রতীকী ছবি।
কাঁধে বুলেট লাগল। রক্ত ঝরল। তা-ও কথার খেলাপ হল না। সমস্ত যন্ত্রণা উপেক্ষা করেই বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন দিল্লির এক ব্যক্তি।
সোমবার রাতে ডিজে মিউজিকের তালে তালে রাস্তায় নাচছিলেন বরযাত্রীরা। ঘোড়ায় টানা গাড়িতে বসেছিলেন বাদল। দক্ষিণ দিল্লির খানপুরের বাসিন্দা বাদলের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল মদনগির এলাকায়। সেখানেই যাচ্ছিলেন বাদল ও তাঁর আত্মীয়স্বজন-বন্ধুবান্ধবেরা। হঠাৎই ঘাড়ের কাছে তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করেন বাদল। হাত দিয়ে বুঝতে পারেন, কাঁধ থেকে রক্ত ঝরছে। সঙ্গে সঙ্গে ঘোড়ার গা়ড়ি থেকে নীচে নেমে আসেন তিনি। বরযাত্রীরা দেখেন রক্তে ভেসে যাচ্ছে তাঁর পোশাক। এর পর বাদলকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি স্থানীয় হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জানান, কাঁধ থেকে বুলেট বার করতে হলে বড়সড় অস্ত্রোপচার করাতে হবে। তবে তা হলে তো বিয়ের অনুষ্ঠান ভেস্তে যাবে। এবং তা করতে মোটেও রাজি নন বাদল। অবশেষে চিকিৎসকেরা বাদলের কাঁধ থেকে রক্ত ঝরা বন্ধ করতে উদ্যোগী হন। ঘণ্টা তিনেকের প্রচেষ্টায় তাতে সফলও হন তাঁরা। এ বার ওই ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থাতেই মদনগিরে বিয়ের মণ্ডপে পৌঁছে যান বাদল। সেখানে কাঁধে বুলেট নিয়েই বিয়র মন্ত্র পড়েন তিনি।
২৫ বছরের বাদলের এই কাহিনি আপাতত সংবাদ শিরোনামে। ঘটনা প্রসঙ্গে দিল্লি পুলিশ (দক্ষিণ)-এর ডেপুটি কমিশনার বিজয় কুমার জানিয়েছেন, রাত ১০টা নাগাদ বাদলকে গুলি করে অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীরা। বরযাত্রীদের মধ্যেই মিশে ছিল তারা। বাদলের গাড়িতে উঠে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে বরযাত্রীদের ভিড়ে মিশে যায় তারা। তিনি বলেন, “প্রথমটায় বাদল কিছু বুঝতে পারেননি, কী ঘটে গিয়েছে। হঠাইৎ কাঁধে একটা জ্বালা জ্বালা ভাব অনুভব করেন। এর পর কাঁধ থেকে রক্ত পড়তে দেখে গাড়ি থেকে নেমে আসেন। ঘটনার কথা জানাজানি হতে না হতেই সেখান থেকে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।”
আরও পড়ুন: দিল্লির বাসে প্রকাশ্যে হস্তুমৈথুন, পুলিশের হাতে যুবককে তুলে দিলেন তরুণী
আরও পড়ুন: মুসৌরিতে মুছে গেল বিজেপি, উত্তরাখণ্ড জুড়েই পুরভোটে বড় ধাক্কা গেরুয়া শিবিরের
ওই আততায়ীদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পুলিশ জানতে পেরেছে, একটি মোটরসাইকেলে চড়ে ঘটনাস্থলে এসেছিল হামলাকারীরা। ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে তা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনার পিছনে কোন ব্যক্তিগত শত্রুতা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিসিপি কুমার। তিনি বলেন, “একটি পুরনো অনিচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টার মামলায় বাদল জড়িত ছিলেন, সেই কারণেই এই হামলা কি না, তা-ও দেখা হবে।”