—ফাইল চিত্র।
ও-পার বাংলার ইলিশ আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ ওঠায় সপ্তাহখানেক আগেই বিধানসভায় জলের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘বাংলাদেশ ইলিশ বন্ধ করেছে। তিস্তার জল দিতে পারিনি। তবে দিতে পারলে খুশি হতাম।’’ মঙ্গলবার তিনি বিধানসভায় দাবি তোলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের আলোচনার ভিত্তিতে নদীকেন্দ্রিক সমস্যার সমাধান করতে হবে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ভিত্তিতে এই সমস্যার সমাধানে একটা স্থায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন।
বাংলাদেশের সঙ্গে জল নিয়ে ভারতের টানাপড়েন দীর্ঘদিনের। এবং সেই জল মানে শুধু তিস্তার জল নয়। বাংলাদেশ থেকে এ-পার বাংলায় আসা নদীর জল নিয়েও সমস্যা আছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমণ্ডির বিধায়ক নর্মদাচন্দ্র রায় এ দিন বিধানসভায় উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ থেকে যে-সব নদী এ রাজ্যে ঢুকেছে, বর্ষার পরে প্রতিবেশী দেশ সেগুলিতে বাঁধ দিচ্ছে। ফলে বিভিন্ন নদী
কার্যত শুকিয়ে যাচ্ছে। তার প্রভাব পড়ছে কৃষি, পানীয় জল প্রকল্প, মৎস্য চাষ এবং পরিবেশের উপরে। বিধায়ক জানান, আত্রেয়ী, তুলাই, পুনর্ভবা, টাঙ্গনের মতো নদী বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ দিনাজপুরে এসেছে। ওই নদীগুলির উপরেই গোটা জেলার কৃষি-সহ সব কিছু নির্ভর করে। কিন্তু বর্ষার পরে যখন জলের প্রয়োজন বাড়ে, বাংলাদেশ ওই নদীগুলিতে বাঁধ দিয়ে দেয়। ফলে ওই জেলায় নদীগুলি শুকিয়ে যায়। অথচ ভরা বর্ষায় বাঁধ না-দেওয়ায় বন্যা হয়। আত্রেয়ী নদীর উপরে একটি পানীয় জল প্রকল্প রয়েছে। এই সমস্যার জেরে সেটিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উল্লিখিত নদীগুলির মাধ্যমে সরাসরি সেচ ব্যবস্থা চালু আছে। কিন্তু বাঁধ দেওয়ার ফলে বিভিন্ন নদী শুকিয়ে যাওয়ায় চাষের কাজে জলই পাওয়া যাচ্ছে না।
বিধায়ক এই সমস্যার কথা জানান সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর উদ্দেশে। তবে উত্তর দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে পড়ে। আত্রেয়ীর বিষয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রীকেও জানিয়েছি। ও-দিকে বাঁধ দেওয়ায় জল আটকে যাচ্ছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের বিপদ বাড়ছে। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে আলোচনা হলে ভাল হয়। কিন্তু সবটাই চলছে ‘ক্যাজুয়ালি’ ভাবে। এটা নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার।’’ বিষয়টি কেন্দ্রের কাছে তুলে ধরার জন্য সব দলের প্রতিনিধি পাঠানোর প্রস্তাব দেন বাম বিধায়ক সমর হাজরা।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।