Bharat Jodo Nyay Yatra

লখিমপুরে আক্রান্ত কংগ্রেস, তুঙ্গে তরজা

অসমেও রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রাকে কোনও বাধা না দেওয়ার কথাই বারবার বলছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। বলেছিলেন, এমনকি রাহুল জোর করে গুয়াহাটির মধ্যে দিয়ে যাত্রা করলেও তাঁকে বাধা দেবেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:৩৮
Share:

রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।

মণিপুরে সম্ভাবনা তুঙ্গে ছিল। বাধা পেতে তৈরি ছিল কংগ্রেসও। কিন্তু গত বারের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে খামোকা কংগ্রেসকে বাধা দিয়ে রাহুল গান্ধীকে সুবিধে করে দিতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ।

Advertisement

নাগাল্যান্ডে গত দুই দফার বিধানসভায় শূন্য হাতে ফেরা কংগ্রেসের যাত্রায় কোনও বাধা দেননি নেফিউ রিও।

অসমেও রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রাকে কোনও বাধা না দেওয়ার কথাই বারবার বলছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। বলেছিলেন, এমনকি রাহুল জোর করে গুয়াহাটির মধ্যে দিয়ে যাত্রা করলেও তাঁকে বাধা দেবেন না। কিন্তু তাল কাটল লখিমপুরে। সেখানে শুক্রবার রাতে রীতিমতো ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে ভাঙা হল কংগ্রেসের তোরণ, ছেঁড়া হল পোস্টার, ভাঙা হল কংগ্রেস কর্মীদের একাধিক গাড়ির কাচ। তাই পড়ে পাওয়া অস্ত্র হাতে পেল কংগ্রেস। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে জাতীয় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘গত ১০ বছরে এ ভাবেই বিজেপি সংবিধান স্বীকৃত জনতার সব ধরনের ন্যায় ও অধিকারকে ধ্বংস করতে, জনতার কন্ঠ রোধ করতে, গণতন্ত্র ধ্বংস করতে সচেষ্ট। এই ধরনের আক্রমণের সামনে কংগ্রেস মাথা নোয়াবে না। দল উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা নেবে।’’ কং‌গ্রেসের তরফে দু’টি এফআইআর করা হয়েছে।

Advertisement

যাত্রারম্ভে মণিপুরে বাধা না পেয়ে বরং হতাশ ছিল কংগ্রেস। অসমে প্রথম থেকেই রাহুল গান্ধী বনাম হিমন্তবিশ্ব শর্মার তরজা চলছে। যা কংগ্রেসের কাছে কাঙ্ক্ষিতই ছিল।

হিমন্ত রাহুলের পরিবারকে দেশের ‘সবচেয়ে ভ্রষ্ট পরিবার’ বলে দাবি করেন। এমনকি রাহুলের গান্ধী পদবি ও পারিবারিক পরিচয় নিয়েও বিদ্রুপ করতে ছাড়েননি। অসমে প্রবেশের পর থেকেই রাহুলও হিমন্তকে দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত মুখ্যমন্ত্রী বলে দাগিয়ে চলেছেন। শুধু হিমন্তই নয়, তাঁর স্ত্রী ও পুত্রকেও দুর্নীতির কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। গত রাতে রাহুল হিমন্তকে সপরিবার আক্রমণ করে বলেন, ‘‘হিমন্ত শুধু দুর্নীতিগ্রস্তই নন, তিনি দেশের অন্য বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের দুর্নীতির পাঠ দিতে পারেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অসমে আদানির প্রয়োজনই নেই। কারণ মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারই আদানি হয়ে রয়েছে। তাঁর স্ত্রী, সন্তান-সহ সকলেই কোনও না কোনও
দুর্নীতিতে যুক্ত।’’

বেঙ্গালুরুর ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটির ছাত্র হিমন্তপুত্র নন্দিল এ নিয়ে রাহুলের বিরুদ্ধে মামলা করতে চলেছেন।

বিতর্ক আরও উস্কে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভূপেন বরা বলেন, “অসমের জনতাকে যে কথা এত দিন বলিনি, তা আজ বলছি। কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে সারদা ও লুই বার্জার কেলেঙ্কারির ফাইল খোলা হয়। কলকাতায় সিবিআই অফিসে দু’বার তলব করা হয় হিমন্তের স্ত্রীকে। যে দিন হিমন্ত বিজেপিতে যোগ দেন, তার দু’দিন আগে দিল্লিতে আমার নর্থ অ্যভিনিউয়ের ফ্ল্যাটে এসে বলেন, চলো আমরা একসঙ্গে বিজেপিতে যাই। আমি বলি, অপেক্ষা কর। তরুণ গগৈয়ের পরে তোমার সময় আসবে। কিন্তু হিমন্ত বলেন, আমার ঘরের লোক বলে দিয়েছেন, তোমায় ভালবেসে বিয়ে করেছি। তোমার জন্য জীবন দিতে পারি, কিন্তু জেলে যেতে পারব না। তাই আমায় বিজেপিতে যেতেই হবে।”

বর্তমানে নরেন্দ্র মোদীর পরেই বিজেপির হয়ে ভোট প্রচারে যে দুই মুখ্যমন্ত্রীর চাহিদা প্রচারে সবচেয়ে বেশি, তাঁরা হলেন যোগী আদিত্যনাথ ও হিমন্তবিশ্ব শর্মা। বাকি মুখ্যমন্ত্রীরা দৌড়ে অনেকটাই পিছনে। তাই কংগ্রেস অঙ্ক কষে, অসমে হিমন্তকে নিশানা করেছে। এরপর উত্তরপ্রদেশেও সেই পথেই হাঁটতে পারে তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement