Women Army

মহিলা সেনা অফিসারদের নিয়ে নেতিবাচক রিপোর্ট

১৭ মাউন্টেন স্ট্রাইক কোর-এর কমান্ডার পদে সদ্য মেয়াদ পূর্ণ করেছেন রাজীব পুরী। তিনি ইস্টার্ন কমান্ডের কমান্ডিং ইন চিফ, লেফটেনান্ট জেনারেল রামচন্দ্র তিওয়ারিকে জমা দিয়েছেন আট জন মহিলা কর্নেলকে ঘিরে তাঁর অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ০৬:৪৬
Share:

সেনার অভ্যন্তরে মহিলা কর্নেলদের একাংশের আচরণ ঘিরে সম্প্রতি যে রিপোর্ট জমা পড়েছে, তা যথেষ্ট নেতিবাচক। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ১০৮ জন মহিলা অফিসারকে কর্নেল পদে উন্নীত করা হয়েছিল। কিন্তু সেনার অভ্যন্তরে মহিলা কর্নেলদের একাংশের আচরণ ঘিরে সম্প্রতি যে রিপোর্ট জমা পড়েছে, তা যথেষ্ট নেতিবাচক। লেফটেনান্ট জেনারেল রাজীব পুরীর সমীক্ষা বরং দাবি করছে, মহিলাদের মধ্যে ‘তুচ্ছ অহংবোধ’ এবং ‘সহানুভূতির অভাব’ প্রবল। এই রিপোর্ট মহিলা কর্নেলদের নিয়ে যেমন প্রশ্ন তুলেছে, তেমনই রিপোর্টের আগাগোড়া নেতিবাচক সুরসেনার অভ্যন্তরে মহিলাদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে নানামহলে। তবে মহিলাদের নিয়োগের ব্যাপারে পিছিয়ে আসা হবে না বলেইদাবি প্রতিরক্ষা সূত্রের। সমালোচনা মূলক রিপোর্ট তাঁরা উন্নততর প্রশিক্ষণের কাজেই লাগাতে চান।

Advertisement

১৭ মাউন্টেন স্ট্রাইক কোর-এর কমান্ডার পদে সদ্য মেয়াদ পূর্ণ করেছেন রাজীব পুরী। তিনি ইস্টার্ন কমান্ডের কমান্ডিং ইন চিফ, লেফটেনান্ট জেনারেল রামচন্দ্র তিওয়ারিকে জমা দিয়েছেন আট জন মহিলা কর্নেলকে ঘিরে তাঁর অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা। সেখানে তিনি অভিযোগ করেছেন, কর্নেল স্তরের মহিলা অফিসারেরা কর্মক্ষেত্রে অন্যদের সঙ্গে যেমন আচরণ করেন, তাতে গভীর দুশ্চিন্তার অবকাশ রয়েছে। ‘বোঝাপড়া ও কৌশলের অভাব’ তাঁদের মধ্যে প্রকট। প্রায়শই ‘তুচ্ছ অহংবোধ’ মাত্রা ছাড়ায় ও ‘নালিশ করার প্রবণতা’ও তাঁদের মধ্যে অত্যন্ত বেশি। সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষেত্রে তাঁরা অধিকাংশ সময় ‘আমার কথাই শেষ কথা’ জাতীয় অবস্থান নিয়েচলেন। কমান্ডার হওয়ার উপযুক্ত প্রশিক্ষণও তাঁদের নেই, দাবি পুরীর।

পয়লা অক্টোবর লেখা চিঠিতে পুরী আরও দাবি করেছেন, মহিলা কমান্ডারদের ইউনিটে গত এক বছরে অফিস ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত সমস্যা অনেক বেড়েছে। ‘বিরোধ মীমাংসা’র পরিবর্তে ‘ক্ষমতা প্রদর্শনের মাধ্যমে বিরোধ শেষ’ করার চল হয়েছে। অবিশ্বাস আর পুষে রাখা ধারণার প্রকোপ বাড়ছে। ফলে ইউনিটের মধ্যে অশান্তিও বাড়ছে। জুনিয়রদের কৃতিত্ব দেওয়ার বদলে নিজেরা কৃতিত্ব নেওয়া এবং জুনিয়রদের সম্পর্কে কুমন্তব্য করার প্রবণতা জাঁকিয়ে বসেছে। পুরীর কথায়, কিছু মহিলা অফিসারের মধ্যে ‘প্রবল অধিকারবোধ’ জন্ম নিয়েছে, ‘ছোটখাটো সাফল্যের মধ্য দিয়ে দ্রুত পরিতৃপ্তি’ লাভের ঝোঁক দেখা যাচ্ছে। সেনায় নিয়োগের ক্ষেত্রে পুরী লিঙ্গসমতার চেয়ে লিঙ্গনিরপেক্ষতার দিকে বেশি জোর দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন।

Advertisement

পুরীর রিপোর্ট এক দিকে অবশ্যই মহিলা অফিসারদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। অন্য দিকে পুরী যে ভাবে মহিলাদের সাধারণীকরণ করেছেনও একতরফা ভাবে যাবতীয় দোষ মহিলাদের ঘাড়ে ঠেলেছেন, তা নিয়েওপ্রশ্ন উঠছে নানা মহলেই। সেনার মতো পুরুষ-অধ্যুষিত পেশায় মেয়েরাকী ভাবে মানিয়ে নিচ্ছেন, কী সমস্যারমুখে পড়ছেন, তা নিয়ে কিছু বলেননিপুরী। বরং মহিলাদের অফিসারদেরকার্যত অযোগ্য বলে দাগিয়ে দিয়ে তিনি যে ভাবে লিঙ্গনিরপেক্ষতার জন্য সওয়াল করেছেন, সেটা সেনাবাহিনীতে মহিলাদের প্রতি বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গিরই পরিচয় কি না, সে প্রশ্নও থাকছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement