শতদ্রু নদীর বন্যায় ভেসে মূক ও বধির ব্যক্তি পৌঁছে গেলেন পাকিস্তান। — ফাইল ছবি।
শতদ্রু নদীর বন্যা যে এমন বিপদে ফেলবে, তা ভাবতেও পারেননি কেউ। সেই জলস্ফীতির রেশ গিয়ে পড়ল ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও। জানা গিয়েছে, ক’দিন আগে ৫০ বছর বয়সি এক মূক এবং বধির ব্যক্তি শতদ্রুর বন্যায় ভেসে যান। যখন তাঁর আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল পরিবার, ঠিক তখনই খবর এল সীমান্তের ও পার থেকে। জানা গেল, তিনি সুস্থই আছেন। তবে আছেন পাকিস্তানে!
পঞ্চনদের দেশ, পঞ্জাব দিয়ে বয়ে গিয়েছে শতদ্রু। দিন কয়েকের বৃষ্টিতে সেই শতদ্রু ভীষণ আকার ধারণ করেছে। ক’দিন আগে শতদ্রুতে ভেসে যান পঞ্জাবের বাসিন্দা মূক ও বধির ওই ব্যক্তি। ভাসতে ভাসতে তিনি সীমান্ত অতিক্রম করে পৌঁছে যান লাহোরের কাছাকাছি। সেই সময় নদীতে কেউ ভাসছেন দেখে তাঁকে উদ্ধার করে পাকিস্তানের ‘রেসকিউ ১১২২’ দল। বুধবার সেই ব্যক্তিকে নিয়েই তথ্য দেওয়া হয় ওই উদ্ধারকারী দলের পক্ষ থেকে। গত বুধবার পাকিস্তানের উদ্ধারকারী দলের তরফ থেকে জানানো হয়, ৫০ বছর বয়সি এক মূক এবং বধির ব্যক্তিকে তাঁরা উদ্ধার করেছেন। তিনি কোনও ভাষাই বুঝতে পারছেন না। কেবলমাত্র সাঙ্কেতিক ভাষায় উত্তর দিতে সক্ষম। জানানো হয়, ওই ব্যক্তির হাতে একটি ট্যাটু রয়েছে। তা হিন্দি ভাষায় লেখা। সেই উল্কি দেখেই পাকিস্তানের উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা বুঝতে পারেন, ওই ব্যক্তি আসলে ভারতের নাগরিক। শতদ্রুর বন্যায় ভেসে চলে এসেছেন লাহোরে।
উদ্ধারকারী দলের মুখপাত্র জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার লাহোর থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে পঞ্জাব প্রদেশের কসুর জেলার গন্ডা সিংহ বালার কাছ থেকে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। মেডিক্যাল পরীক্ষার পর তাঁকে গোয়েন্দা সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের দৈনিক সংবাদপত্র ‘ডন’-এর এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই ব্যক্তি তাঁর ডান হাতে হিন্দি ভাষায় একটি ট্যাটু করিয়েছিলেন। সেই ট্যাটু দেখেই তাঁর বাড়ি কোথায় তা বুঝতে পারেন উদ্ধারকারীরা। তবে কী ভাবে ওই ব্যক্তি শতদ্রু নদীর জলে ভেসে গেলেন তা এখনও পরিষ্কার নয়। তিনি কি নদীতে স্নান করতে নেমেছিলেন? জানা যায়নি তা-ও।
ওই প্রতিবেদনে আরও লেখা হয়েছে, শতদ্রুর বন্যার জেরে গন্ডা সিংহ বালা-সহ আশপাশের একাধিক গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। পাকিস্তানের পঞ্জাব সরকারের দেওয়া তথ্য বলছে, এর আগে চন্দ্রভাগার বন্যায় অন্তত ৪০টি গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তাতে প্রভাবিত হয়েছিলেন ৪৮ হাজার মানুষ। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই এ বার দু’কূল ছাপিয়ে ছুটছে শতদ্রু।