প্রতীকী ছবি।
ভিডিও ১: রেললাইনের মাঝখানে উপুড় হয়ে শুয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে ছেলেটি। ক্যামেরা ডান দিকে প্যান করতেই দেখা যায়, প্রবল বেগে তার দিকে ধেয়ে আসছে ট্রেন। কিন্তু ওঠার কোনও তাড়া নেই। ব্যাকগ্রাউন্ডে শোনা যাচ্ছে, পাশ থেকে চেঁচিয়ে উৎসাহ দিচ্ছে বন্ধুরা। ট্রেনটি একেবারে কাছে আসতেই মাথা নামিয়ে নেয় ওই তরুণ। তার পর ছেলেটির উপর দিয়ে দুরন্ত বেগে বেরিয়ে যায় ট্রেনটি। রুদ্ধশ্বাস ১০ সেকেন্ডের পরেই লাইন থেকে উঠে উল্লাস শুরু করে ছেলেটি।
ভিডিও ২: রেললাইনের একেবারে ধার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে রয়েছে এক তরুণ। পিছন থেকে ছুটে আসা ট্রেনের সঙ্গে নিজস্বী তুলছে সে। বোঝা যায় এক হাতে ফোনটি ধরে আছে। অন্য হাতটি বাড়িয়ে দেখাতে চাইছে যে, ট্রেনটি তার ধেয়ে আসছে। টানা হর্ন বাজাতে বাজাতে হুড়মুড় করে চলে আসে ট্রেনটি। ধাক্কা মারে ছেলেটিকে। সব ওলটপালট হয়ে যায়।
প্রথমটি কাশ্মীরের কোথাও। দ্বিতীয়টি হায়দরাবাদের লিঙ্গাম্পল্লীতে। দু’টি ভিডিওই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ও সংবাদমাধ্যমে। বেঁচে গিয়েছে দ্বিতীয় ছেলেটিও। তবে মারাত্মক জখম। ট্রেনের সঙ্গে নিজস্বী তোলার কথা জানতে পেরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন আরপিএফ আধিকারিক। শিবা নামে ওই ছেলেটি হাসপাতালে ভর্তি। অবস্থা স্থিতিশীল।
আরও পড়ুন: রাস্তায় ছবি বেচছেন বাঙালি ইঞ্জিনিয়ার
কাশ্মীরের ছেলেটির নাম আদিল মকবুল। অনন্তনাগের বিজবিহারার বাসিন্দা। তাকে ও ঘটনাটির ভিডিও তোলার জন্য তার বন্ধুকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে কাউন্সেলিং করে হুঁশিয়ারি দিয়ে দু’জনকেই ছেড়ে দেয় পুলিশ। পরে একটি ভিডিওয় আদিল বলে, ‘‘আমি ভুল বুঝতে পেরেছি। তাই এমন ভুল না করারই পরামর্শ দেব। আমার বিরুদ্ধে মামলা না করার জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ।’’ এ যাত্রায় এরা প্রাণে বাঁচলেও স্টান্টের ছবি ও নিজস্বী তোলার নেশা বহু ক্ষেত্রেই প্রাণঘাতী হচ্ছে। রেল মন্ত্রক ও রাজ্য সরকারগুলিও বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এমন স্টান্ট যাতে না করা হয়, তার জন্যও সচেতনও করা হয়েছে। কিন্তু লাভ হচ্ছে না। ভিডিও দু’টি যাতে আর না ছড়ায় তার জন্য সতর্ক করা হয় হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অ্যাডমিনদের।
ফেসবুক-টুইটারে ছেলে দু’টি ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন অনেকেই। জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার টুইট, ‘‘এমন দুঃসাহসিক কাজে কোথাও মারাত্মক ভুল রয়েছে। আমি এই কমবয়সি নির্বোধ ছেলেগুলোকে একেবারেই বুঝি না।’’