হেমকুণ্ড সাহিবে পানীয় হাতে ‘ডাকু হাসিনা’। ছবি: সংগৃহীত।
৮ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকা লুট করে পালাচ্ছিলেন মনদীপ কৌর। পঞ্জাবের অপরাধ জগতে অবশ্য তাঁকে এই নামে খুব বেশি কেউ চেনেন না। সেখানে তাঁর আসল পরিচিতি ‘ডাকু হাসিনা’ নামে। পঞ্জাবে ডাকাতদের তিনিই ‘মক্ষিরানি’। সম্প্রতি অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ফাঁদ পেতে তাঁকে ধরেছে পুলিশ। পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন মনদীপের স্বামী জসবিন্দর সিংহও।
গত ১০ জুন লুধিয়ানায় একটি বড়সড় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। খোয়া যায় ৮ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকা। পুলিশের কাছে খবর ছিল, এই ডাকাতির নেপথ্যে রয়েছেন মনদীপ, জসবিন্দরদের দল। তার পর থেকে তাঁদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি শুরু করে পঞ্জাব পুলিশ। কিন্তু ‘ডাকু হাসিনা’কে পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পায়, লুধিয়ানায় ডাকাতিতে সাফল্য পাওয়ার পর নেপালে পালানোর ছক কষেছেন এই ডাকাত দম্পতি। তবে দেশ ছাড়ার আগে তাঁরা কয়েকটি তীর্থস্থানে ঘুরে পুণ্য সঞ্চয় করতে চান। হেমকুণ্ড, কেদারনাথ, হরিদ্বার তাঁদের তালিকায় ছিল। লুধিয়ানার সাফল্যের পর ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাতে প্রথমেই তাঁরা হেমকুণ্ড সাহিবের গুরুদ্বারে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন।
উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার হেমকুণ্ড সাহিবে আগে থেকেই ওত পেতে ছিল পঞ্জাব পুলিশের একটি দল। সেখানে ‘ডাকু হাসিনা’কে ধরার জন্য ফাঁদ পাতা হয়েছিল। গুরুদ্বারের সামনে অনেকেই কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে যাতায়াত করছিলেন। পুলিশ সেখানে বিনামূল্যে পানীয়ের বন্দোবস্ত করে। ১০ টাকা দামের পানীয় বিনামূল্যে গুরুদ্বারে আসা পুণ্যার্থীদের দেওয়া হচ্ছিল। ডাকাত দম্পতিও পানীয় নিতে যান। তা খাওয়ার জন্য তাঁদের মুখের কাপড় সরাতে হয়েছিল। তখনই পুলিশ দম্পতিকে চিহ্নিত করে।
তবে সঙ্গে সঙ্গে মনদীপ বা তাঁর স্বামীকে ধরা হয়নি। গুরুদ্বারে প্রবেশ করে তাঁদের প্রার্থনার সুযোগ দিয়েছিল পুলিশ। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার পর ধাওয়া করে তাঁদের ধরা হয়। লুধিয়ানার ডাকাতির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত নয় জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আরও তিন জনের খোঁজ চলছে। তবে ডাকাতির ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিলেন মনদীপরাই। তাঁদের কাছ থেকে তৎক্ষণাৎ ২১ লক্ষ নগদ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ।