উদ্ধার হওয়া গয়না। ছবি: সংগৃহীত।
কোনও দলবল নয়, দিল্লিতে গয়নার শোরুম লুট করতে একাই ‘অপারেশন’ চালিয়েছেন। ২৪ ঘণ্টা ধরে সেই ‘অপারেশন’-এর খুঁটিনাটি পুলিশের কাছে উগলেছেন অভিযুক্ত লোকেশ শ্রীবাস। গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গয়নার একটি শোরুম থেকে ২৫ কোটি টাকার হিরে, সোনা এবং নগদ টাকা লুট হয়েছিল। দিল্লির বুকে সাম্প্রতিক অতীতে এমন বড় মাপের ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি বলেই পুলিশের দাবি।
তদন্তে নেমে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে ঠিকই, কিন্তু এই লুটের ঘটনার হোতা হলেন লোকেশ। জেরায় পুলিশের কাছে তিনি স্বীকার করেছেন যে, কোনও দলবল নয়, গোটা ঘটনাটি চালিয়েছেন তিনি একাই। শুক্রবার সকালে লোকেশকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বর্তমানে ছত্তীসগঢ়়ের বিলাসপুর পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, এ মাসের গোড়ার দিকে বিলাসপুর থেকে বাসে দিল্লিতে এসেছিলেন লোকেশ। লুটের আগে ভোগাল এলাকার বেশ কয়েক দিন ধরে রেকি চালান তিনি। সোমবার ওই এলাকার দোকানপাট বন্ধ থাকে। আর লুটের জন্য সোমবারকেই বেছে নিয়েছিলেন বলে পুলিশের কাছে জানিয়েছেন লোকেশ। ২৪ সেপ্টেম্বর দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর রাত ১১টায় ‘অপারেশন’ শুরু করেন তিনি। শোরুমলাগোয়া একটি বাড়ি টপকে সেখানে ঢোকেন। শোরুমের দেওয়াল কাটেন। তার পর ভিতরে ঢুকে সমস্ত গয়না ব্যাগে ভরেন। সারারাত শোরুমের ভিতরেই কাটান। কারণ পর দিন ছিল সোমবার। দোকানপাটও খোলেনি। ফলে নজরদারিও খুব একটা ছিল না। সোমবার সারা দিন শোরুমের ভিতরে কাটান। তার পর সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ গয়না, টাকা নিয়ে সরে পড়েন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে লুটপাট চালান। তার পর সোজা কাশ্মিরী গেটে চলে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে সোজা ছত্তীসগঢ়ের উদ্দেশে রওনা দেন।
মঙ্গলবার সকালে এই লুটের ঘটনায় হুলস্থুল পড়ে যায়। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ছত্তীসগঢ়ের বিলাসপুর পুলিশ দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যোগোযাগ করে জানায়, তারা এক ব্যক্তিকে প্রচুর গয়না-সহ ধরেছে। দিল্লির ডাকাতির সঙ্গে যোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখার কথা জানানো হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, যে ব্যক্তিকে বিলাসপুর পুলিশ গ্রেফতার করেছে, সে-ই দিল্লির ডাকাতির হোতা।