Fani

‘শুনুন জল জমে গিয়েছে, ঝড় হচ্ছে, অন্ধকারে বসে আছি’

কত ক্ষণ কথা বলতে পারব জানি না। ফোনের টাওয়ার থাকছে না। আর লোডশেডিং হয়ে গিয়েছে। ফোনে চার্জও দিতে পারছি না। এখানে পরিস্থিতি খুব খারাপ। এখন অন্ধকারে বসে আছি আমরা।

Advertisement

স্বরলিপি ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৯ ১১:৪১
Share:

পুরীর হোটেল থেকে তোলা ছবি।— টুইটার থেকে গৃহীত।

হ্যালো… হ্যালো…

Advertisement

কে বলছেন? শুনতে পাচ্ছি না, জয় জগন্নাথ।

হ্যালো, শুনতে পাচ্ছেন?

Advertisement

হ্যালো, জয় জগন্নাথ…।

শুনেন, এখানে জল জমি (জমে) গেছে। আমরা বাইরে বেরচ্ছি না। প্রচুর হাওয়া। ঝড় হইছি (হচ্ছে)।

দিলু, আমাদের হোটেলে রান্নার ঠাকুর। ও-ই ফোনটা ধরেছিল। আমি দুর্গাপদ দাস। সোনার গাঁও হোটেলের ম্যানেজার। বলুন…

এখন কী অবস্থা আপনাদের ওখানে?

কত ক্ষণ কথা বলতে পারব জানি না। ফোনের টাওয়ার থাকছে না। আর লোডশেডিং হয়ে গিয়েছে। ফোনে চার্জও দিতে পারছি না। এখানে পরিস্থিতি খুব খারাপ। এখন অন্ধকারে বসে আছি আমরা।

আরও পড়ুন, ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়, সুরক্ষিত থাকতে কী করবেন, কী করবেন না?

গতকাল রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে। এখন খুব জোর বৃষ্টি হচ্ছে। ৫মে পর্যন্ত কোনও বুকিং নেই। প্রশাসন থেকে কোনও বুকিং নিতে বারণ করা হয়েছে। যা বুকিং ছিল সব ক্যানসেল করে দিয়েছি।

আপনি এবং বাকি কর্মচারীরা হোটেলেই রয়েছেন?

কোথায় যাব আমরা? তবে আমাদের হোটেলটা সমুদ্র থেকে হেঁটে ৭-১০ মিনিট। হোটেল থেকে কোনও কর্মীই আজ বেরোয়নি। এখানে বসেই যা শুনলাম, সি-বিচে জল অনেকটাই এগিয়ে চলে এসেছে। প্রায় রাস্তার কাছে। যাঁরা বিচে ব্যবসা করেন, তাঁরা গতকাল থেকেই নিজেদের যেটুকু সম্বল দোকানের কাঠামোটুকু দড়ি, বাঁশ দিয়ে বেঁধে বিচে রেখে গিয়েছিলেন। ওটা আর বাড়ি নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। অস্থায়ী দোকান সব উঠে গিয়েছে। সব হোটেল থেকে টুরিস্টদের আজ বেলা ১২টার মধ্যে বের করে দেওয়ার কথা ছিল।

হ্যালো…

হ্যাঁ, বলুন….

সব টুরিস্টদের চলে যেতে বলেছে হোটেল থেকে গতকালই। আজ, এখন যা অবস্থা, এই ঝড়-বৃষ্টিতে কাউকে বের করে দেওয়া যায় বলুন? আমাদের একটা সুবিধে আছে। হোটেলে আজ কোনও টুরিস্ট নেই।

শুক্রবার সকাল থেকেই পুরীতে শুরু হয়েছে দুর্যোগ।

আমার বাড়ি এখানে। সাইক্লোন আসছে, প্রশাসন খুব ভাল করেই বুঝিয়ে দিয়েছে। গতকাল সারাদিন মাইকিং করেছে। বাড়ি তো বটেই, হোটেলের কর্মচারীদের জন্যও চাল, ডাল, তেল, নুন মজুত করে রেখেছি। অনেক বেশি দাম দিয়ে এগুলো কিনতে হয়েছে। কারণ সাইক্লোনের খবর হওয়ার পরই দাম বেড়ে গিয়েছে সব কিছুর। এখন প্রবল ঝড়, তার সঙ্গে বৃষ্টি। হোটেলের সামনে জল জমে গিয়েছে। কেউ বেরচ্ছে না। ভলেন্টিয়ার আর পুলিশ ভর্তি রাস্তায়, বিচে। কোনও অটো, টোটো, রিকশাকে বিচের সামনে যেতে দিচ্ছে না। সবার ব্যবসা বন্ধ। কিন্তু পুলিশ বা ভলেন্টিয়ারাও কত ক্ষণ থাকতে পারবে জানি না। শুনলাম বিপদ বাড়লে সরকার থেকে আরও লোক দিয়ে ব্যবস্থা করবে।

আরও পড়ুন, ঝড় আসছে...

তবে ছোট থেকে এখানে আছি। অনেক দুর্যোগ হয়। জগন্নাথ সব আবার ঠিক করে দেন…।

হ্যালো …

…যেও নম্বর সাহা আপনা সম্পর্ক করিবা কো চাওচাছি তাহা বর্তমান সুইচ অফ অছি। দয়া করি কিছু সময়ও পরে চেষ্টা করন্তু।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement