Congress

দেরিতে হলেও জাগল কংগ্রেস! রাহুলের উত্তরসূরি বাছতে ১০ অগস্ট সিডব্লিউসি-র বৈঠক, জল্পনায় প্রিয়ঙ্কাও

কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) তথা বর্ষীয়ান নেতা কেসি বেণুগোপাল রবিবার টুইট করে জানালেন, ‘আগামী ১০ অগস্ট শনিবার বেলা ১১টায় কংগ্রেস সদর দফতরে সিডব্লিউসির বৈঠক হবে।’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৯ ১৯:২৮
Share:

কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে মনমোহন সিংহ, গুলাম নবি আজাদ, রাহুল গাঁধী, মল্লিকার্জুন খড়্গে, আহমেদ পটেলের মতো নেতারা। —ফাইল চিত্র

দানা বাঁধছে না আন্দোলন-প্রতিবাদ। শশী তারুর, করণ সিংহদের গলায় উদ্বেগ। একের পর এক বিধায়ক দল ছাড়ায় হাতছাড়া হয়েছে কর্নাটক রাজ্য। শীর্ষ নেতৃত্বের গয়ংগচ্ছ মনোভাবে দল ছেড়েছেন দীর্ঘদিনের কংগ্রেস নেতা ও রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিংহ। এই পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত দেরিতে হলেও দলের সভাপতি নির্বাচনের দিকে এগোতে শুরু করল কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি (সিডব্লিউসি)। আগামী ১০ অগস্ট বৈঠকে বসছে দলের নীতি নির্ধারণ কমিটি। মূল অ্যাজেন্ডা, রাহুল গাঁধীর উত্তরসূরি নির্ধারণ। রাহুলের ইস্তফার প্রায় আড়াই মাস পর বৈঠকে বসছে সিডব্লিউসি।

Advertisement

লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার পরপরই দলের ভরাডুবির দায়িত্ব নিয়ে সিডব্লিউসি-র বৈঠকে ইস্তফা দিয়েছিলেন রাহুল গাঁধী। কিন্তু দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সে সময় তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করে তাঁকেই দায়িত্বে থাকার আর্জি জানায়। তারও মাসখানেক পরে প্রকাশ্যে আনেন নিজের ইস্তফাপত্র। শুধু তিনি নিজে নয়, গাঁধী পরিবারের কাউকেও সভাপতি পদের জন্য না ভাবার কথা বলেন রাহুল। পাশাপাশি বেশ কয়েক বার বলেছেন, তাড়াতাড়ি সভাপতি নির্বাচন করতে। কিন্তু প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও এখনও সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়াই কার্যত শুরু করতে পারেনি কংগ্রেস।

এই পরিস্থিতিতে দলের রাশ কার্যত আলগা, দিশা নেই। কোন পথে আন্দোলন, কী ভাবে বিজেপির মোকাবিলা, সংসদের স্ট্র্যাটেজি কী— সে সব বিষয়ে সাংসদ থেকে নেতারা কার্যত বিভ্রান্ত। একের পর এক নেতা পদ ছেড়েছেন। দলই ছেডে় দিয়েছেন অমেঠীর দীর্ঘদিনের বর্ষীয়ান নেতা ও রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিংহ। তিনি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বলেও খবর। কর্নাটকে একের পর এক বিধায়ক দল ছাড়া এবং তার জেরে ডেজিএস-কংগ্রেস জোটের সরকার পড়ে গেলেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তেমন কাউকে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি। আবার শশী তারুর, করণ সিংহের মতো নেতাদের গলায় হতাশার সুর।

Advertisement

কিন্তু এত কিছুর পরও কার্যত শীর্ষ নেতৃত্বের ঘুম ভাঙেনি। তবে শেষ পর্যন্ত নড়েচড়ে বসল হাইকম্যান্ড। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) তথা বর্ষীয়ান নেতা কেসি বেণুগোপাল রবিবার টুইট করে জানালেন, ‘আগামী ১০ অগস্ট শনিবার বেলা ১১টায় কংগ্রেস সদর দফতরে সিডব্লিউসির বৈঠক হবে।’ গত সপ্তাহেই দলের তরফে জানানো হয়েছিল, সংসদের বাদল অধিবেশন শেষ হলেই সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। বাদল অধিবেশন শেষ হচ্ছে ৭ অগস্ট, বুধবার। রাহুল গাঁধীর ইস্তফার প্রায় আড়াই মাস পর এই প্রথম বৈঠকে বসছে সিডব্লিউসি।

আরও পডু়ন: অনুপ্রবেশ ইস্যুতে মুখরক্ষার চেষ্টা! ভারতের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ইমরানের

আরও পডু়ন: অজিত ডোভাল, গুপ্তচর-গোয়েন্দা প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে অমিত শাহ, কাশ্মীর নিয়ে বাড়ছে জল্পনা

দলের হাই কম্যান্ডের একটি সূত্রে খবর, ১০ তারিখের বৈঠকে প্রধান আলোচ্য বিষয় হতে চলেছে রাহুল গাঁধীর উত্তরসূরি বাছাই। দলের অভ্যন্তরেই একাধিক মত ঘুরপাক খাচ্ছে। একটি অংশ মনে করছে, ঘুরে দাঁড়াতে তরুণ ব্রিগেডের কোনও নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া উচিত। আবার অন্য পক্ষ মনে করছে, এমন একজন জনপ্রিয় কাউকে তুলে আনা প্রয়োজন, যাঁর রয়েছে অভিজ্ঞতা এবং বুদ্ধিমত্তার মিশেল এবং সর্বভারতীয় স্তরে গ্রহণযোগ্যতা। আবার দলের মধ্যেই পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহের মতো নেতাদের একটি গোষ্ঠী প্রিয়ঙ্কা গাঁধীকে সভাপতি করার পক্ষে। তাঁরা খোলাখুলিই প্রিয়ঙ্কার পক্ষে ব্যাট ধরেছেন। রাহুল যদিও প্রিয়ঙ্কার কথা মাথায় রেখেই গাধী পরিবারের কাউকে সভাপতি না করার কথা বলেছেন, কিন্তু দলের অভ্যন্তরীণ একটি শীর্ষ সূত্রে খবর, ১০ তারিখের বৈঠকে প্রিয়ঙ্কার নাম নিয়েও জোর চর্চা হওয়ার সম্ভাবনা।

কংগ্রেস দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, দলে কোনও সঙ্কট তৈরি হলে সবচেয়ে বর্ষীয়ান নেতা দলের হাল ধরবেন এবং তিনিই দলের দৈনন্দিন কাজকর্ম পরিচালনা করবেন। পরবর্তী সভাপতি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত তিনিই অন্তর্বর্তী সভাপতির নাম ঘোষণা করবেন। ফলে ১০ তারিখের বৈঠকে সেই অন্তর্বর্তী সভাপতির নাম ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement