—প্রতীকী চিত্র।
শাসক ও বিরোধী বিধায়কদের তীব্র সমালোচনা, শহর জুড়ে উত্তেজনা, আগুন, কার্ফু, পুলিশের গাড়ি ও অস্ত্র লুট এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবির সামনে শেষ পর্যন্ত মাথা নোয়াল মেঘালয় সরকার। পুলিশি হানায় চেরিস্টারফিল্ড থাঙ্খেয়র মৃত্যুতে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হল। বাড়ানো হল কার্ফু। সিআরপিএফ ও বিএসএফ মিলিয়ে ৫টি কোম্পানি শহরে মোতায়েন করা হয়েছে।
জঙ্গি সংগঠন এইচএনএলসির প্রতিষ্ঠাতা তথা সাধারণ সম্পাদক থাঙ্খেয় আত্মসমর্পণ করেছিলেন আগেই। অসুস্থ ছিলেন তিনি। গত ১৩ অগস্ট পুলিশের বিরাট বাহিনী রাত ৩টে নাগাদ তাঁর বাড়ির দরজা ভেঙে ঢুকে তাঁকে গুলি করে মারে। দাবি করে, চেরিস্টার ছুরি নিয়ে আক্রমণ করায় তাঁকে গুলি করতে হয়েছে। অথচ পরিবার জানায়, কিডনির রোগে আক্রান্ত চেরি ভাল করে হাঁটতে পারতেন না। তাঁর একটি হাতও অবশ ছিল। বিরোধীরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লাখমেন রিম্বুইয়ের পদত্যাগ দাবি করে। মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা জানিয়েছেন, তিনি রিম্বুইয়ের পদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করে দেখছেন। পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দু’বার কথা হয়েছে তাঁর।
চেরিস্টারের অন্ত্যেষ্টিতে রবিবার অশান্ত হয়ে ওঠে শিলং। আক্রান্ত হয় পুলিশ। চেরির অনুগামীরা পুলিশের গাড়ি ও তিনটি রাইফেল লুট করে। পরে পোড়ানো হয় সেই গাড়ি। অনেক গাড়ি ও ট্রাকে পাথর ছোড়া হয়। সে দিন রাত ৮টা থেকে শিলং ও আশপাশের এলাকায় জারি হয়েছে কার্ফু। সোমবার কার্ফুর মেয়াদ বাড়িয়ে ১৮ অগস্ট পর্যন্ত করা হয়। মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবাও আরও ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখা হচ্ছে। কার্ফুর মধ্যেও মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি লক্ষ করে পেট্রল বোমা ছোঁড়া হয়।
নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে রবিবারই রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রিম্বুই। লেখেন, “চেরিস্টারের মৃত্যুতে পুলিশ আইনের বাইরে গিয়ে কাজ করেছে।” আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী কনরাড বলেন, “অনেক সময় পুলিশি অভিযান পরিকল্পনামাফিক চলে না। চেরিস্টারের মৃত্যুতে বিচারবিভাগীয় তদন্ত হবে। উপমুখ্যমন্ত্রী প্রেস্টন টিংসংয়ের নেতৃত্বে শান্তি কমিটি তৈরি হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য মুখ্যমন্ত্রী, উপমুখ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে গড়া হয়েছে সাব-কমিটি।”