শেষকৃত্য: নিহত জওয়ানদের কফিন কাঁধে সিআরপি অফিসারেরা। রবিবার শ্রীনগরে। ছবি: পিটিআই।
সারা বছর কেটেছে সন্ত্রাস আর বিক্ষোভের বিরুদ্ধে লড়াই করে। কাশ্মীরে মোতায়েন সিআরপিএফ জওয়ানেরা এই দুই ক্ষেত্রেই দারুণ কাজ করেছেন বলে মনে করেন বাহিনীর কর্তারা। তাই বছরের শেষ দিনে তাঁদের জন্য দারুণ সব পার্টির আয়োজন করেছিল বাহিনী। কিন্তু সে দিনই পুলওয়ামার জঙ্গি হানা বদলে দিল গোটা চিত্রটাই।
সিআরপিএফ কর্তারা জানিয়েছেন, শ্রীনগর-সহ উপত্যকার নানা অংশে বিভিন্ন ব্যাটেলিয়নের সদর দফতরে বর্ষবরণ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। শ্রীনগরের অমর সিংহ ক্লাবে প্রায় ৪ হাজার জওয়ান আসবেন বলে আশা ছিল কর্তাদের। কিন্তু পুলওয়ামার ঘটনার জেরে সব উৎসব বন্ধ করা হয়েছে। পাঁচ সহকর্মীর মৃত্যুতে উল্টে শোকপালন শুরু হয়েছে বাহিনীতে।
শ্রীনগরের লাল চকে ঘণ্টা ঘরের কাছে ইতিমধ্যেই উৎসব শুরু করেছিল বাহিনী। কিন্তু আজ সেখানে বিশেষ শব্দই শোনা গেল না। চারপাশে কেবল পাহারায় রয়েছেন সশস্ত্র জওয়ানেরা। লাল চকের বাইরে মোবাইল বাঙ্কারে বসে এক সাব ইনস্পেক্টর বললেন, ‘‘এ বার আর বর্ষবরণের উৎসব হবে না। বেশ কয়েক জন সহকর্মীকে হারিয়েছি। উৎসবের মেজাজটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’
আরও পড়ুন: ক্যাম্পে হামলায় হত ৫ জওয়ান, খতম ২ জঙ্গিও
প্রতি বছরেই শ্রীনগরে ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’-এর দফতরের বাইরে বর্ষবরণ করে সিআরপিএফ। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দা ও দোকানিদের সঙ্গে নিয়ে হইচই করেন জওয়ানেরা। আয়োজন করা হয় সঙ্গীতানুষ্ঠানের। সেখানে মোতায়েন এক জওয়ান বললেন, ‘‘কী ভাবে উৎসব করব বলুন? নিহতদের মধ্যে আমার এক কোর্সমেটও রয়েছে।’’
জম্মু-কাশ্মীরে সিআরপিএফের বিশেষ অধিকর্তা এস এন শ্রীবাস্তবের কথায়, ‘‘আমরা দেশের মানুষকে রক্ষা করি। মানুষই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’’
জঙ্গি হামলার পাশাপাশি আজ অশান্ত ছিল নিয়ন্ত্রণরেখাও। আজ ভোরেই রাজৌরি ও পুঞ্চে হামলা চালায় পাক সেনা। রাজৌরির নৌশেরা সেক্টরে পাক সেনার গুলিতে নিহত হন এক সেনা। পুঞ্চের দিগওয়ার সেক্টরেও এলোপাথাড়ি গুলি চালায় পাক সেনা। জবাব দেয় ভারতীয় সেনাও। রাত একটায় শুরু হয় গুলির লড়াই। শেষ হয় ভোর পাঁচটায়।
গত কালই কাশ্মীরের ফরওয়ার্ড পোস্টগুলিতে জওয়ানদের প্রস্তুতি ঘুরে দেখেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত।