ছবি: সংগৃহীত।
নজিরবিহীন ঘটনা! আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় আজ জহওরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে মোতায়েন করা হল আধাসেনা। আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভিতরে আধাসেনাদের ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। তাদের হাতে কেবল লাঠি থাকলেও, এ ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আধাসেনার টহল নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হলে পরে তাদের গেটের বাইরে মোতায়েন করা হয়। এ দিকে হস্টেলের ভাড়া বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে আড়াআড়ি বিভক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। পড়ুয়াদের পাশে অধিকাংশ শিক্ষক দাঁড়ালেও সিদ্ধান্তে সমর্থন জানিয়েছেন উপচার্যের ঘনিষ্ঠ শিক্ষকদের একাংশ। আজ এ নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন দু’পক্ষ। পড়ুয়াদের পাশে থাকা শিক্ষকদের অনেক রাত পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখেন সঙ্ঘ-অনুগত শিক্ষকেরা।
জেএনইউ হস্টেলের ভাড়া কার্যত দ্বিগুণ করার প্রতিবাদে গত দশ দিন ধরে আন্দোলন করছেন দলমত নির্বিশেষে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘট। বন্ধ সব ক্লাস। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পড়ুয়া— দু’পক্ষই অনমনীয়। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন পর্যন্ত মিছিল করে গিয়ে সেখানেই অবস্থান বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পড়ুয়ারা। গণ্ডগোল হতে পারে আঁচ করে সকালেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মোতায়েন করা হয় সিআরপি, যার পরে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে মুখ না-খুললেও, একটি সূত্রের মতে এর পিছনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাত নেই। দিল্লি পুলিশকে বিক্ষোভের আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছিল। তারাই ওই আধাসেনা পাঠিয়েছে। কিন্তু ছাত্রদের সামলাতে আধাসেনা কেন, এ বিষয়ে দিল্লি পুলিশের ব্যাখ্যা— বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ। তাই অতিরিক্ত বাহিনীর আবেদন জানিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দিল্লি পুলিশের হাতে এই মুহূর্তে বাড়তি পুলিশ নেই। তাই দিল্লি পুলিশের হাতে যে ৫০ কোম্পানি সিআরপি রয়েছে, তা থেকে এক কোম্পানি আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে মোতায়েন করা হয়। ডিসিপি দেবেন্দ্র আর্য জানান, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল হতে পারে বলে খবর ছিল। তাই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে আধাসেনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে মোতায়েন করা হয়েছে, ভিতরে নয়।’’
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে গ্রেনেড হানায় হত ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দা
আধাসেনার উপস্থিতিতে ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা আজ প্রথমে উপাচার্য এম জগদেশ কুমারের বাড়ি ঘেরাও করেন। সেখান থেকে মিছিল করে যান বসন্তকুঞ্জ থানায়। হস্টেল ভাড়া বাড়ানোর আন্দোলনে সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ ছাত্র সংগঠন এবিভিপি পাশে থাকলেও, আজ জহওরলাল নেহরু স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (জেএনএসইউ) থানা অভিযান করার সিদ্ধান্ত নিলে পিছিয়ে আসে তারা।