কেরলের উচ্চশিক্ষা ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কে টি জলিল। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রের বিজেপি এবং কেরলের বাম সরকারের মধ্যে চলতি সংঘাতে আরও নতুন মাত্রা যোগ হল। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কে টি জলিলের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় সরকার। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে জোড়া অভিযোগের তদন্ত করবে ইডি এবং এনআইএ। কেরলের শাসক শিবির প্রাথমিক ভাবে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপকে ‘প্রতিহিংসামূলক’ বলেই মনে করছে।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে ৫ লক্ষ টাকার সহায়তা পেয়েছিলেন জলিল। কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় সম্মতি ছাড়া আর্থিক সহায়তা নিয়ে বিদেশি মুদ্রা সংক্রান্ত আইন (ফেমা) লঙ্ঘন হয়েছে কি না, তা দেখার ভার দেওয়া হয়েছে ইডি-কে। আমিরশাহি দূতাবাসের মাধ্যমেই কিছু ধর্মীয় প্রচারপুস্তিকা আনিয়ে বিলি করেছিলেন জলিল। ওই ঘটনার নেপথ্যে কোনও ষড়যন্ত্র আছে কি না, সেই তদন্ত করবে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)।
তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দরের ভার আদানি সংস্থার হাতে দেওয়া ঘিরে কেন্দ্র বনাম কেরল সরকারের সংঘাত বাধার আগেই দক্ষিণী ওই রাজ্যে সোনা-কাণ্ডকে কেন্দ্র করে রাজনীতির জল ঘোলা হচ্ছিল। তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দর থেকেই প্রায় ১৫ কোটি টাকার সোনা উদ্ধার হয়েছিল এবং ঘটনায় অভিযুক্ত আমিরশাহি দূতাবাসের অস্থায়ী কর্মীদের সঙ্গে মন্ত্রী জলিলের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বলে সরব হয়েছিল বিজেপি। আরও কিছু জায়গা থেকে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে শেষ পর্যন্ত তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। অভিযোগ, আমিরশাহি দূতাবাসের মাধ্যমে ৩০টি প্যাকেটে জলিলের আনানো প্রচারপুস্তিকা রাজ্যের নানা জায়গায় বিলি করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: সফল পেশাদাররা দলে দলে সক্রিয় রাজনীতিতে, কারণ কি ‘লকডাউন সিনড্রোম’?
আরও পড়ুন: তৃণমূল সরকারের কাছ থেকে পাওয়া জমি ফিরিয়েই দিলেন সৌরভ
ইতিহাসের অধ্যাপক জলিল মল্লপ্পুরম জেলার তাভানুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সিপিএম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন। দু’বছর আগে তাঁকে এলডিএফ মন্ত্রিসভায় জায়গা দেওয়া হয়। বাম শিবিরে আসার আগে তিনি ছিলেন মুসলিম লিগে। দলীয় নেতৃত্বের প্রতি বিদ্রোহ ঘোষণা করে লিগ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন। কেরলে যোগাযোগ করা হলে জলিল বলেন, ‘‘নতুন করে আমার কিছু বলার নেই। এলাকায় খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট বিতরণের জন্য আর্থিক সহায়তা নেওয়া এবং বিদেশ থেকে ধর্মীয় প্রচারপুস্তিকা আনানোর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট জায়গায় জানিয়েই করেছিলাম। এর মধ্যে ষড়যন্ত্রের কিছু নেই।’’
এলডিএফের আহ্বায়ক এবং সিপিএম নেতা এ বিজয়রাঘবনের বক্তব্য, ‘‘বিরোধী দলের নির্বাচিত সরকারগুলির বিরুদ্ধে নানা রকম প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। এই ঘটনাও তার অঙ্গ হতে পারে। তবে বিশদে না জেনে বিস্তারিত মন্তব্য করতে পারব না।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে সুরেন্দ্রনের দাবি, ‘‘পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হলে রাজ্য সরকারের মুখোশ খুলে যাবে! সোনা-কাণ্ডের সঙ্গেও সরকারের যোগসাজশ উদঘাটিত হবে।’’ কেরলকে ‘দেশদ্রোহীদের অভয়াঞ্চল’ বানানোর দায়ে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের ইস্তফা দাবি করে রবিবার এক দিনের অনশন কর্মসূচিতেও বসেছেন সুরেন্দ্রন।