বিজেপি স্লোগান তুলেছে ‘চলো পাল্টাই’। সেই স্লোগানের ‘পাল্টা’ হিসাবেই ত্রিপুরায় শাসক বামফ্রন্ট ২০% আসনে নতুন মুখ নিয়ে এল। বয়সে একেবারে তরুণ না হলেও তুলনামূলক বিচারে তাঁরা নবীন।
প্রথম বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আসা ১০ জনকে ধরে এ বার বামেদের প্রার্থী তালিকায় নতুন ১২ জন। তালিকায় মহিলা মুখ ৭। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাজ্যসভার সাংসদ ঝর্না দাস বৈদ্য। সচরাচর রাজ্যসভার মেয়াদ ফুরনোর আগে কাউকে বিধানসভায় প্রার্থী করে না সিপিএম। দলীয় সূত্রের খবর, জিতে এলে রাজ্যে ঝর্নাকে মন্ত্রী করা হতে পারে। আর তাঁর ছেড়ে যাওয়া আসন থেকে রাজ্যসভায় পাঠানো হতে পারে সিপিএমের পলিটব্যুরোর কোনও গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর অবশ্য বলেছেন, ‘‘সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলে যে কোনও কাউকেই পাঠানো যেতে পারে!’’
ঝর্নাকে প্রার্থী করা হয়েছে বাধারঘাট আসন থেকে। যেখানে আগে লড়ত আরএসপি। এ বার বাম শরিক আরএসপি, সিপিআই ও ফরওয়ার্ড ব্লককে একটি করে আসন ছেড়ে ৫৭টি আসনে লড়ছে সিপিএম। আরএসপি-র মতো সিপিআইয়েরও ভাগের একটি আসন বাদ গিয়েছে। আরও উল্লেখ্য, ঝর্নার বাধারঘাট, প্রতাপগড় ও সূর্যমণিনগর— এই তিন কেন্দ্রের জন্য হাঁফানিয়া মাঠে জনসভা করে আজ থেকেই নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার।
এই মুহূর্তে রাজ্যের প্রধান বিরোধী হিসেবে কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে উঠে এসেছে বিজেপি। সিপিএমকে হঠিয়ে ক্ষমতা দখল করাই তাদের লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই উপজাতি সংগঠন আইপিএফটি-র সঙ্গে তাদের আসন সমঝোতাও হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে বিজেপি জোটও তাদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে। মানিকবাবুও তাই প্রচার শুরু করেছেন বিজেপি-আইপিএফটি জোটকে বিঁধেই। তিনি বলেছেন, ‘‘শিকারি মোরগের মতো আইপিএফটি-কে ধরেছে বিজেপি! রাজ্যে শান্তি রাখার জন্য বিজেপি-কে পরাস্ত করতে হবে। একটি আসনও তারা যেন না পায়, দেখতে হবে। বিভেদের রাজনীতি চলবে না!’’
পাশাপাশিই মুখ্যমন্ত্রী খোলাখুলি বলেছেন, ‘‘সব মানুষের সব সমস্যার সমাধান আমরা করতে পারিনি। কিন্তু জন-অকল্যাণের জন্য কিছু করিনি!’’ জনতার প্রতি তাঁর আর্জি, কোথাও বাম নেতা বা কর্মীদের কারও ব্যবহার ত্রুটিপূর্ণ হলে তার জন্য গোটা দলকে যেন দায়ী করা না হয়।
আগরতলায় আজ প্রথমে সিপিএমের রাজ্য কমিটি ও পরে বামফ্রন্টের বৈঠক করে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। প্রয়াত খগেন দাশের জায়গায় বিজনবাবুকেই বামফ্রন্টের আহ্বায়ক করা হয়েছে। শরিক নেতাদের পাশে নিয়ে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে গিয়ে বিজনবাবু জানান, গত বারের বিজয়ী পাঁচ বিধায়ককে এ বার বাদ দেওয়া হয়েছে। বিজনবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘চার জনকে বয়সের কারণে বাদ দেওয়া হয়েছে। অন্য জনকে সংগঠনের কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল।’’