খগেন্দ্র জামাতিয়া
ত্রিপুরা বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণা হবে শনিবার। সিপিএমের শোকমিছিল হবে রবিবার। ফলপ্রকাশের আগের দিন, শুক্রবার দলের পতাকা অর্ধনমিত।
এমন অভূতপূর্ব পরিস্থিতির কারণ— ভোটগণনার মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে রাজ্যের মন্ত্রী এবং ৬ বারের বিধায়ক খগেন্দ্র জামাতিয়ার মৃত্যু। এ বারও কৃষ্ণপুর সংরক্ষিত আসনে সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে ওই কেন্দ্রের ভোট গণনা হবে নির্ধারিত দিনেই। তবে খগেন্দ্রবাবু জয়ী হলে সেখানে আবার উপনির্বাচন। ফলপ্রকাশের আগের দিন এমন আকস্মিক ধাক্কায় বাম শিবিরের মন খারাপ।
এ বার ত্রিপুরায় শক্ত লড়়াইয়ের মুখোমুখি সিপিএম। কাকতালীয় ভাবে, সেই নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যেই মৃত্যু ঘটল এখনও পর্যন্ত তিন নেতার। ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগে কলকাতায় আকস্মিক মৃত্যু হয়েছিল ত্রিপুরা রাজ্য বামফ্রন্টের আহ্বায়ক খগেন দাশের। প্রচার চলাকালীন আচমকা মারা যান বিধায়ক এবং চড়়িলাম কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী রমেন্দ্র নারায়ণ দেববর্মা। যে কারণে ওই আসনের ভোট পিছিয়ে ১২ মার্চ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ বার ভোট এবং গণনার মাঝে প্রয়াণ ঘটল ৬৩ বছরের খগেন্দ্রবাবুর। তাঁর হাতে ছিল রাজ্যের সমবায়, মৎস্য ও দমকল দফতর।
বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের সঙ্গে এক সময়ে যুক্ত ছিলেন খগেন্দ্রবাবু। পরে সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ এবং সিপিএমে আসা। এমন এক মুখ, যার উপরে উপজাতি এলাকায় বিশেষ ভরসা করতেন সিপিএম নেতৃত্ব। কয়েক দিন আগেও প্রচারে ছোটাছুটি করেছেন। সম্প্রতি ধরা পড়়েছিল ব্লাড ক্যান্সার। ভোটের পরে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন দিল্লির এইম্সে। সেখানেই আজ সকালে মৃত্যু।
মৃত্যু সংবাদ পেয়েই সকাল থেকে দফায় দফায় দিল্লির হাসপাতাল, কমিশন এবং রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর জানিয়েছেন, দু’দিন দিল্লিতেই থাকবে মরদেহ। ফল ঘোষণার পর দিন ত্রিপুরায় দেহ এনে শোকমিছিল এবং অন্ত্যেষ্টি। ভোট-গণনার প্রস্তুতির মাঝেই দুঃসংবাদ পেয়ে তেলিয়ামুড়়ায় মন্ত্রীর পরিজন ও অনুগামীদের কাছে দৌড়়েছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দাশ। এত অল্প দিনে পরপর শোকযাত্রা— বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে সিপিএমের রাজ্য দফতরে।