ছবি: সংগৃহীত
প্রথম রাউন্ডে আবার হার! দ্বিতীয় এবং শেষ রাউন্ডেই শেষ রক্ষার অন্তিম সুযোগ সীতারাম ইয়েচুরির জন্য!
রাজ্যসভায় দলের সাধারণ সম্পাদককে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে তৃতীয় বারের জন্য প্রার্থী করতে এক চুলও রাজি নয় সিপিএমের প্রকাশ কারাট শিবির! দিল্লিতে রবিবার পলিটব্যুরোর বৈঠকে সেই মতেই অনড় রইলেন কারাটেরা। দলীয় সূত্রের খবর, পলিটব্যুরোর মধ্যে ১১ জন সদস্য ইয়েচুরিকে কংগ্রেসের মদতে প্রার্থী না করার পক্ষেই মত দিয়েছেন। আর দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ইয়েচুরিকে সংসদে দরকার, এই মতের পক্ষে সওয়াল করেছেন ৫ জন। তার মধ্যে তিন জনই পশ্চিমবঙ্গের। পলিটব্যুরো সদস্যদের দেওয়া ১১-৫ রায় আজ, সোমবার থেকে গিয়ে পড়বে কেন্দ্রীয় কমিটিতে। ইয়েচুরিরা চাইছেন, এ বার কেন্দ্রীয় কমিটিতে ভোটাভুটি হোক। চূড়ান্ত ফয়সালা যা-ই হোক, অন্তত নথিভুক্ত হয়ে থাক দলের অবস্থান।
পলিটব্যুরোর বৈঠকে কারাট শিবির ফের যুক্তি দিয়েছে, কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের সাংসদ হতে যাওয়া জরুরি নয়। বরং, নিজস্ব শক্তিতে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হওয়ার জন্য তিনি অপেক্ষা করুন। পরের বার কেরল থেকে রাজ্যসভার আসন খালি হলে বামেদের শক্তিতেই তাঁর সংসদে ফেরার পথ থাকবে। যদিও সিপিএমের শীর্ষ নেতারা বিলক্ষণ জানেন, মালয়ালি নন, এমন কাউকে সে রাজ্য থেকে সাংসদ করতে যথেষ্ট অনীহা আছে কেরল সিপিএমের নেতৃত্বের। যে কারণে অতীতে বৃন্দা কারাটকেও জায়গা ছাড়তে চাননি তাঁরা। কেরলের কোর্টে বল ঠেলে আসলে ইয়েচুরির সম্ভাবনা ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বুঝে তীব্র বিরোধিতাই করেছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরা। তাঁদের পাল্টা যুক্তি, নরেন্দ্র মোদী জমানার স্বেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে সংসদের কক্ষে লড়াই করার সৈনিককে জেনেবুঝে বাধা দেওয়া আত্মহত্যারই সামিল!
ইয়েচুরি-ঘনিষ্ঠ নেতারা চাইছেন, কেন্দ্রীয় কমিটিতে সরাসরি ভোট হোক এই নিয়ে। তাতে ইয়েচুরির রাজ্যসভায় যাওয়া আটকে যেতেই পারে। কিন্তু কে বড় বিপদ— কংগ্রেস না বিজেপি, এই প্রশ্নে আগামী বছরের পার্টি কংগ্রেসে দলীয় লাইন ঠিক করার সময়ে দলের এখনকার অবস্থান ময়না-তদন্ত করা যাবে। পলিটব্যুরোর এক সদস্যের কথায়, ‘‘আমরা চাই, অন্য সব কিছুর আগে কেন্দ্রীয় কমিটিতে এই বিষয়টারই ফয়সালা হোক। দরকারে ভোট হোক।’’
ইয়েচুরির জন্য অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব দলের বড় অংশ। সদ্যই মহারাষ্ট্রের একটি সংবাদমাধ্যমের উদ্যোগে ইয়েচুরির হাতে সেরা সাংসদের পুরস্কার তুলে দিয়েছেন বিদায়ী উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি। ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও। সেই ছবি ব্যবহার করে ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ শীর্ষক পেজে প্রচার শুরু হয়েছে— ‘কেন্দ্রে যখন নাথুরাম, সংসদে চাই সীতারাম’। দলের সুবক্তা নেতাকে ফের সংসদে পাঠানোর দাবি কারাটদের নজরে আনতে চেয়ে সেখানে একের পর এক মন্তব্য জমা হচ্ছে।