প্রতীকী ছবি।
দলের পলিটবুরোয় এ বার নতুন আসা নেতাদের হাতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিতে চলেছে সিপিএম। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের আলোচনায় তেমন পরিকল্পনাই হয়েছে। নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির আসন্ন বৈঠকে ওই দায়িত্ব বণ্টনে চূড়ান্ত সিলমোহর পড়বে।
পার্টি কংগ্রেসের পরে সিপিএমের পলিটবুরোর প্রথম বৈঠক বসেছিল দিল্লিতে। দলীয় সূত্রের খবর, প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট সেখানে ব্যাখ্যা করেছেন, দেশের নানা প্রান্তে যে ভাবে বিভিন্ন ঘটনা ঘটে চলেছে, তার প্রেক্ষিতে এখন বিবিধ কর্মসূচি ও আন্দোলনের পরিকল্পনা নিতে হবে। তার জন্য সংগঠনকেও অনেক বেশি সক্রিয় রাখতে হবে। পলিটবুরোর তরফে বিগত বেশ কয়েক বছর সংগঠন সংক্রান্ত বিষয়ের দায়িত্বে রয়েছেন কারাট। কিন্তু তাঁরই মত, সেই দায়িত্ব এখন আরও ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন। সেই সূত্রেই কারাটের সঙ্গে বি ভি রাঘবুলুকে সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে কথা হয়েছিল। কিন্তু রাঘবুলু নিজে সর্বক্ষণের দায়িত্ব নিয়ে হায়দরাবাদ ছেড়ে দিল্লিতে থাকতে আগ্রহী নন। দলীয় সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে ঠিক হয়েছে, কেরলের নেতা এ বিজয়রাঘবনকে সংগঠনের বিষয়ে বাড়তি ভার দেওয়া হবে। কেরলে বামেদের ফ্রন্ট এলডিএফের আহ্বায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ছেন বিজয়রাঘবন। দিল্লিতে দলের কেন্দ্রীয় দফতরে বেশি সময় দিতে হবে, এই কথা বলেই তাঁকে এ বার পলিটবুরোয় নিয়ে আসা হয়েছে। কারাট সাধারণ সম্পাদক থাকার সময়ে সংগঠনের বিষয় ছিল এস রামচন্দ্র পিল্লাইয়ের হাতে। পিল্লাই এ বার বয়স-নীতি মেনে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। পিল্লাইয়ের দায়িত্বই অনেকটা পালন করতে হবে বিজয়রাঘবনকে।
পলিটবুরোর আর এক নতুন সদস্য, কৃষক সভার সর্বভারতীয় সভাপতি অশোক ধওয়েলেকে আন্দোলন, কর্মসূচি সংক্রান্ত বিভাগের দায়িত্ব দিতে চলেছে দল। মহারাষ্ট্রে ‘কিযাণ লং মার্চ’ আয়োজন করে গোটা দেশের নজর কেড়েছিলেন ধওয়েলেরা। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে কৃষক ফ্রন্টের তত্ত্বাবধানের পাশাপাশি আন্দোলনের সূচি ঠিক করার ভারও এ বার থাকবে তাঁর উপরে। সূত্রের খবর, অতিমারির সময় থেকে কোভিড সংক্রান্ত আলাদা শাখা রেখে তার নানা দিক পর্যালোচনা করে কর্মসূচি নিয়ে চলেছে সিপিএম। ওই বিভাগের দায়িত্ব এ বার দেওয়া হচ্ছে বাংলার নেতা রামচন্দ্র ডোমকে। জনজাতি, দলিত সংক্রান্ত যে বিভাগ বৃন্দা কারাটের হাতে আছে, সেখানেও ভূমিকা থাকবে রামচন্দ্রের। প্রসঙ্গত, বীরভূমের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক ও বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্রকেই পলিটবুরোয় প্রথম দলিত মুখ বলা হচ্ছে সিপিএম সূত্রে।
নবগঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম পূর্ণাঙ্গ বৈঠক ডাকা হয়েছে আগামী ১৮ ও ১৯ জুন। পলিটবুরোর নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় কমিটির তরফে কারা কোন রাজ্যের সাংগঠনিক বিষয় দেখবেন, তা চূড়ান্ত হওয়ার কথা ওই বৈঠকেই। মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে গোটা দেশে কী ভাবে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা যায়, তা নিয়ে বাম দলগুলি অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে সমন্বয় করে এগোবে বলে ঠিক হয়েছে পলিটবুরোর এই বৈঠকে। পলিটবুরোর এক সদস্যের কথায়, ‘‘সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক যাবতীয় অধিকারের বিরুদ্ধে বিজেপির বুলডোজ়ার নীতিই হোক বা লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি, তীব্র আন্দোলনই এখন একমাত্র রাস্তা।’’