kerala

CPM: ঘাটতি ‘নিষ্ঠা’য়, জরিমানা বাম বিধায়কের

ইডুক্কি জেলার দেবীপুরম কেন্দ্র থেকে এ বারই প্রথম বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছেন এ রাজা। আগের তিন বার ওই কেন্দ্র সিপিএমের দখলেই ছিল, এ বার সেখানে প্রার্থী বদল করেছিল দল।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

তিরুঅনন্তপুরম শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২১ ০৬:১৫
Share:

সিপিএম বিধায়ক এ রাজা.

ঈশ্বরে তাঁদের বিশ্বাস নেই। ঘাটতি ধরা পড়েছে ‘একনিষ্ঠতা’তেও! স্পিকারের নির্দেশে তাই নতুন করে শপথ নিয়ে আর্থিক গুণাগারও দিতে হল সিপিএমের বিধায়ককে।

Advertisement

ঘটনা কেরলের। ইডুক্কি জেলার দেবীপুরম কেন্দ্র থেকে এ বারই প্রথম বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছেন এ রাজা। আগের তিন বার ওই কেন্দ্র সিপিএমের দখলেই ছিল, এ বার সেখানে প্রার্থী বদল করেছিল দল। বিধায়ক হিসেবে কেরলের বিধানসভায় তামিলে শপথ নিতে চেয়েছিলেন রাজা। শপথ-বাক্য পড়ার সময়ে ‘একনিষ্ঠ ভাবে’ (ইংরেজিতে ‘সলেম্‌লি’) কথাটি তিনি তামিলে ভুল বলেছিলেন। নতুন বিধায়কের বিরুদ্ধে ‘ত্রুটিপূর্ণ শপথগ্রহণের’ অভিযোগ এনে স্পিকার এম বি রাজেশকে চিঠি দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা ভি ডি সতীশন। স্পিকারের অনুসন্ধানে প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই বিধায়কের শপথে ভুল ধরা পড়ে। অধিবেশন চলাকালীন গত মাসেই ফের শপথ নিতে হয়েছে রাজাকে। স্পিকারের গঠিত কমিটি এর পরে রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছে, রাজা যে ‘ফর‌্ম অফ ওথ’ দেখে পাঠ করেছিলেন, ভুল তাতেই ছিল। তাই আরও বড় শাস্তির হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন তিনি!

বিধি মেনে জরিমানা অবশ্য দিতে হয়েছে রাজাকে। স্পিকার জানিয়েছেন, সংবিধানের ১৯৩ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করে ‘ভুল বা অসম্পূর্ণ’ শপথ নেওয়ার দায়ে সংশ্লিষ্ট বিধায়কের দিনপিছু ৫০০ টাকা জরিমানা ধার্য হয়। নতুন করে শপথ নেওয়ার আগে পর্যন্ত যত দিন রাজা বিধানসভায় হাজিরা দিয়েছেন, তত দিনের জন্য ৫০০ টাকা করে তাঁকে দিতে হবে শাস্তি হিসেবে। বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের সতীশন দাবি করেছিলেন, ‘ভুল’ শপথ নেওয়া ওই বিধায়ক স্পিকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তা হলে স্পিকারের নির্বাচনও বাতিল হওয়া উচিত! স্পিকার রাজেশ অবশ্য রায় দিয়েছেন, ওই বিধায়কের ভোট ছাড়াই স্পিকার-পদের নির্বাচনের নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছিল। আলাদা করে ওই বিধায়কের ভোট তুল্যমূল্য ক্ষেত্রে স্পিকার নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছিল, এমন নয়। তাই সেই নির্বাচনকে অবৈধ বলা চলে না।

Advertisement

শপথ-বিতর্কে গঠিত কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ওই বিধায়ক তামিলে শপথ নিতে ইচ্ছাপ্রকাশ করার পরে রাজ্যের আইন দফতর সেই ভাষায় শপথের বয়ান লিখে পাঠিয়েছিল। শপথে ‘ঈশ্বরের নামে’ বা ‘একনিষ্ঠ ভাবে’ কথাটা বলতে হয়। কমিউনিস্ট রাজার ঐশ্বরের নামে শপথ নেওয়ার প্রশ্ন নেই। যে বয়ান দেখে তিনি শপথ পাঠ করেছিলেন, সেথানেই ‘একনিষ্ঠ ভাবে’র তামিল শব্দ ভুল লেখা ছিল। রাজার বক্তব্য, ‘‘এই ভুল কোনও ভাবেই ইচ্ছাকৃত ছিল না। জরিমানা আমি দিয়ে দিয়েছি। ভুলটা যে একেবারেই অনিচ্ছাকৃত, এটা সকলে বুঝতে পারলে বিতর্ক থাকবে না।’’

কেরলে অবশ্য এমন বিতর্ক নতুন নয়। গৌরী আম্মার প্রতিষ্ঠিত জেএসএসের এক বিধায়ক কুড়ি বছর আগে ‘শ্রী নারায়ণ গুরু’র নামে শপথ নিয়েছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, নারায়ণ গুরুই তাঁর ঈশ্বর। মামলা হলে কেরল হাইকোর্ট অবশ্য সেই দাবি মানেনি, দু’বছরের মধ্যে ফের শপথ নিতে হয়েছিল ওই বিধায়ককে। ছয়ের দশকে এক সিপিআই বিধায়ক শপথে ‘জনতাকে সাক্ষী রেখে’ কথাটি বলে বিতর্ক বাধিয়েছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement