প্রকাশ কারাট। —ফাইল চিত্র।
সীতারাম ইয়েচুরির মৃত্যুর ফলে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদকের পদ খালি হয়ে যাওয়ায় আপাতত প্রকাশ কারাটই এ কে গোপালন ভবন থেকে পলিটব্যুরোর বাকি সকলের সঙ্গে সমন্বয়ের কাজ করবেন। শুক্রবার সারাদিন ও শনিবার দুপুর পর্যন্ত সিপিএমের পলিটব্যুরোতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বার পলিটব্যুরোর এই প্রস্তাব কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পেশ হবে। রবিবার ও সোমবার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হবে।
সিপিএম সূত্রের খবর, আগামী এপ্রিল মাসে মাদুরাইয়ে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস বসবে। তার ফলে এখন সিপিএমের সামনে দলের রাজনৈতিক প্রস্তাবের খসড়া, গত পার্টি কংগ্রেসে গৃহীত রাজনৈতিক রণকৌশলের পর্যালোচনা এবং সাংগঠনিক রিপোর্টের খসড়া তৈরি করতে হবে। প্রকাশ কারাট এর আগে তিন দফায় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সেই অভিজ্ঞতার জোরে একমাত্র তাঁর পক্ষেই এই দায়িত্ব সামলানো সম্ভব। এই প্রথম সিপিএমের কোনও সাধারণ সম্পাদক পদে থাকাকালীন প্রয়াত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে কোনও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিয়োগের ব্যবস্থা সিপিএমের দলীয় সংবিধানে নেই। তাই সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে পার্টি কংগ্রেস পর্যন্ত প্রকাশ কারাটই সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করবেন বলে পলিটব্যুরো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার পরে মাদুরাইতে নতুন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবে।
আজ দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে সীতারাম ইয়েচুরির স্মরণসভায় কারাটই সভাপতিত্ব করেন। ৫০ বছর একসঙ্গে কাটানো ইয়েচুরির কথা বলতে গিয়ে কান্নায় গলা বুজে আসে কারাটের। শোকপ্রস্তাব পাঠের সময়ে কেঁদে ফেলেন বৃন্দা কারাট। দু’জনেই বলেন, কোনও দিন এই পরিস্থিতিতে পড়তে হবে, তা তাঁরা ভাবেননি।
ইয়েচুরির উত্তরসূরী হিসেবে আগামী বছর সিপিএমের নতুন সাধারণ সম্পাদক কে হবেন, তা নিয়েও দলের মধ্যে চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ পলিটব্যুরোতে ৭৫ বছরের ঊর্ধ্বসীমা মেনে আগামী পার্টি কংগ্রেসে পলিটব্যুরো থেকে প্রকাশ, বৃন্দা, মানিক সরকার, পিনারাই বিজয়ন-সহ সাত জন প্রথম সারির নেতানেত্রীর সরে দাঁড়ানোর কথা। সে ক্ষেত্রে সাধারণ সম্পাদকের দৌড়ে থাকবেন এম এ বেবি, বি ভি রাঘাভুলু, এ বিজয়রাঘবনরা। কিন্তু এখন সিপিএমের করুণ দশা ও বিরোধী রাজনীতির বাস্তবতা মাথায় রেখে সকলেরই মত, এমন এক জনকে দরকার, যাঁর সর্বভারতীয় রাজনীতিতে পরিচিতি রয়েছে। সেক্ষেত্রে ৭৫ বছরের ঊর্ধ্বসীমা শিথিল হবে কি না, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে।