—প্রতীকী চিত্র।
সুস্থতার হার বাড়লেও বিরাম নেই দৈনিক সংক্রমণে। একই সঙ্গে বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যাও। তবে হাত গুটিয়ে বসে নেই সরকার। আগামী জুলাইয়ের মধ্যে দেশের ২৫ কোটি নাগরিকের কাছে নোভেল করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। রবিবার দেশবাসীকে এমনটাই জানালেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। নিরপেক্ষ ভাবে যাতে ওই প্রতিষেধকের বণ্টন হয়, সরকার তা সুনিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রতি রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘সানডে সংবাদ’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথোপকথন চালান হর্ষ বর্ধন। এ দিন সেখানে তিনি বলেন, ‘‘আগামী জুলাইয়ের মধ্যে ১৩০ কোটির মধ্যে ২৫ কোটি দেশবাসীর কাছে করোনার প্রতিষেধক পৌঁছে দেওয়াই লক্ষ্য সরকারের। তার জন্য ৪০-৫০ কোটি ডোজ হাতে পাচ্ছি আমরা। সকলের মধ্যে সমান ভাবে সেগুলি বন্টন করা হবে।’’
প্রতিষেধক হাতে এসে পৌঁছলে, প্রথমে কাদের তা দেওয়া হবে, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। হর্ষ বর্ধন জানান, স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে একটি তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনীয়তা বুঝে কাদের উপর আগে প্রতিষেধক প্রয়োগ করা উচিত অক্টোবরের মধ্যে তা জানিয়ে দিতে তাদের। তবে সামনে থেকে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছেন যাঁরা, সেই স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: দেশে সংক্রমণ ৬৫ লক্ষ ছাড়াল, নতুন করে আক্রান্ত ৭৫,৮২৯, সুস্থতা বেড়ে ৮৪.১৩ শতাংশ
এই মুহূর্তে ভারতে করোনার তিনটি সম্ভাব্য প্রতিষেধকের ট্রায়াল চলছে, যার মধ্যে অন্যতম হল কোভিশিল্ড। ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড এবং ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা যৌথ ভাবে সেটি তৈরি করছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে রয়েছে প্রতিষেধকটি। তাতে সফল হলে আদর পুণাওয়ালার সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই) সেটি উৎপাদন করবে।
কিন্তু করোনার প্রতিষেধ তৈরি হয়ে গেলেও, ভারত সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় পুঁজি রয়েছে কিনা, তা নিয়ে গত সপ্তাহেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। তিনি জানান, ভাইরাসের টিকা তৈরি হয়ে গেলেও, আগামী ১২ মাসে তা কিনতে এবং সকলের উপর প্রয়োগ করতে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কোষাগারে ৮০ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সেই টাকা আছে কি? এর আগে জুলাই মাসে একটি সংবাদমাধ্যমে পুণাওয়ালা বলেন, ‘‘টাকার হিসেব চাইছি কারণ ভাঁড়ারে কত টাকা রয়েছে, তা আগে জানা প্রয়োজন, যাতে পরিকল্পনা মতো এগনো যায়।’’
আরও পড়ুন: কোভিড রুখতে সহকর্মীর পেনেও হাত নয়!
কোভিশিল্ড যদি করোনার টিকা প্রতিপন্নও হয়, তাহলে প্রত্যেক ডোজের খরচ পড়বে ১ হাজার টাকা। ১৩০ কোটি মানুষকে তার জোগান দিতে গেলে মাসে প্রায় ৩ কোটি ডোজ প্রয়োগ করতে হবে। তার পরেও পুরোপুরি সেরে উঠতে গেলে দু’বছরের বেশি সময় লাগতে পারে বলেও জুলাই মাসে সংবাদমাধ্যমে জানান পুণাওয়ালা। তবে তাঁর যুক্তি খারিজ করে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। প্রতিষেধক কেনা এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে তার বন্টনের জন্য যথেষ্ট টাকা রয়েছে সরকারের।