গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৩৩১ জনের। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
দেশে রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। সেই বৃদ্ধির ধারা মঙ্গলবারও অব্যাহত। মোট আক্রান্তের নিরিখে ইটালি, স্পেনকে পিছনে ফেলে ভারত ইতিমধ্যেই রয়েছে বিশ্বের পঞ্চম স্থানে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ন’হাজার ৯৮৭ জন। এই বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল দু’লক্ষ ৬৬ হাজার ৫৮৯ জন। আক্রান্তের নিরিখে রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, দিল্লি ও গুজরাত।
আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যু সংখ্যা বৃদ্ধিতে উদ্বেগ বাড়ছে দেশে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার থাবায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ৩৩১ জনের। ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যা এই প্রথম দেশে ৩০০ পার করল। সেই সঙ্গে মৃত্যুতে তৈরি হল নতুন রেকর্ড। কোভিড-১৯-এর কারণে দেশে মোট মৃত্যু হল সাত হাজার ৪৬৬ জনের। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে তিন হাজার ১৬৯ জনের। গুজরাতে এক হাজার ২৮০ জনের। এর পর রয়েছে রাজধানী দিল্লি। সেখানে মোট ৮৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৪১৪), পশ্চিমবঙ্গ (৪০৫), তামিলনাড়ু (২৮৬), উত্তরপ্রদেশ (২৮৩), রাজস্থান (২৪৬) ও তেলঙ্গানা (১৩৭)।
দেশে আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি মহারাষ্ট্রে। চিনের মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যাকে সোমবারই ছাপিয়ে গিয়েছে সে রাজ্যের মোট আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দু’হাজার ৫৫৩ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। এ নিয়ে সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ৮৮ হাজার ৫২৮ জন। এর পরই তামিলনাড়ু। সেখানে মোট আক্রান্ত ৩৩ হাজার ২২৯ জন। রাজধানী দিল্লিতে মোট ২৯ হাজার ৯৪৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গুজরাতে মোট আক্রান্ত ২০ হাজার ৪৫৪ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দশ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। কোভিডে রাজস্থানে ১০ হাজার ৯৪৭ জন ও উত্তরপ্রদেশে ১০ হাজার ৭৬৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৯,৬৩৮), পশ্চিমবঙ্গ (৮,৬১৩), কর্নাটক (৫,৭৬০), বিহার (৫,২০২), হরিয়ানা (৪,৮৫৪), অন্ধ্রপ্রদেশ (৪,৮৫১), জম্মু ও কাশ্মীর (৪,২৮৫), তেলঙ্গানা (৩,৬৫০), ওড়িশা (২,৯৯৪), অসম (২,৭৭৬), পঞ্জাব (২,৬৬৩), কেরল (২,০০৫), উত্তরাখণ্ড (১,৪১১), ঝাড়খণ্ড (১,২৫৬) ও ছত্তীসগঢ় (১,১৬০)-র মতো রাজ্যগুলি।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪২৬ জন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন আট হাজার ৬১৩ জন। শেষ কদিনে কলকাতা, হাওড়া, দুই পরগনা ছাড়িয়ে রাজ্যের অন্য জেলাগুলিতেও করোনার পজিটিভের সংখ্যা বেড়েছে। এ রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ৪০৫ জনের। করোনার কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ন’জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: লাদাখ নিয়ে জবাব সংসদেই: প্রতিরক্ষামন্ত্রী
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা রোজদিন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও, আক্রান্তদের সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটাও কম নয়। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এটাই কিছুটা আশার আলো। কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর এখনও অবধি এক লক্ষ ২৯ হাজার ২১৫ জন সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ৭৮৫ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আরও পড়ুন: মানসিক চাপ বৃদ্ধিই কৌশল চিনের
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)