দেশের কোভিড পরিসংখ্যান। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
৪০, ৪৭, ৫৩, ৫৯, ৬২ হাজার— গত ৫ দিনে দেশের করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যাটা এ রকমই। ফেব্রুয়ারিতেও দেশের দৈনিক সংক্রমণ ১২-১৪ হাজারের আশপাশে ঘোরাঘুরি করছিল। তার পর থেকে বদলাতে শুরু করে পরিস্থিতি। গত কয়েক সপ্তাহে ফের তা লাগামছাড়া। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যে ভাবে আছড়ে পড়ছে দেশের কয়েকটি রাজ্যে, তা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে প্রশাসনের। তা রুখতে রাত্রিকালীন কার্ফু জারি হচ্ছে মহারাষ্ট্রে। কারণ, এই রাজ্যের পরিস্থিতি সবথেকে করুণ। অন্য রাজ্যগুলিতেও কঠোর করা হচ্ছে করোনা বিধিনিষেধ।
করোনাভাইরাসে দেশে এখন ও অবধি আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১৯ লক্ষ ৮ হাজার ৯১০ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬২ হাজার ২৫৮ জন। যা চলতি বছরে একদিনে এখনও অবধি সর্বাধিক। ২০২০ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ের পর শনিবার ফের একদিনে এত লোক আক্রান্ত হলেন দেশে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ২৯১ জনের। এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৬১ হাজার ২৪০ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস।
তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সবথেকে খারাপ অবস্থা হয়েছে মহারাষ্ট্রে। গত বছরে অতিমারির শুরু থেকে দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্রের দৈনিক আক্রান্ত ছিল সবথেকে বেশি। কিন্তু গত এক সপ্তাহে সেই সব সংখ্যাও ছাপিয়ে গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬ হাজার ৯০২ জন আক্রান্ত হয়েছেন সে রাজ্যে। যা গোটা করোনাকালে সর্বোচ্চ। সেই সংক্রমণ রুখতে রবিবার ২৮ মার্চ থেকে মহারাষ্ট্র জুড়ে জারি হতে চলেছে রাত্রিকালীন কার্ফু। এর আগে সে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় আংশিক লকডাউন জারি হয়েছে। সে রাজ্যে এই বছর প্রকাশ্যে হোলি খেলার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এই সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যে জন সাধারণের সচেতনতার অভাব চোখে পড়ছে দেশ জুড়ে। মুখে মাস্ক না থাকার পাশাপাশি অনেক জায়গাতেই উৎসব ঘিরে জনসমাগম চিন্তা বাড়াচ্ছে। শুধু মহারাষ্ট্র নয়, আরও কয়েকটি রাজ্যের পরিস্থিতিও গত কয়েক দিনে খারাপ হয়েছে। কর্নাটক, গুজরাত, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশে দৈনিক সংক্রমণ দু’হাজার ছাড়িয়েছে। পঞ্জাবে তা ৩ হাজার ছাড়াল। দিল্লি, হরিয়ানা, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশেও গত ক’দিনে হু হু করে বাড়ছে আক্রান্ত। তুলনায় কেরলের অবস্থা বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে একই রকম রয়েছে।
এই দৈনিক আক্রান্তের বৃদ্ধিতে দেশের সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বাড়তে বা়ড়তে তা সাড়ে ৪ লক্ষ ছাড়িয়েছে। সঙ্গে দেশে টিকাকরণও চলছে জোর কদমে। গত ২৪ ঘণ্টায় টিকা দেওয়া হয়েছে ২৬ লক্ষের বেশি। এখনও অবধি দেশে কোভিড টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে ৫ কোটি ৮১ লক্ষের বেশি।