Coronavirus in India

২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি প্রায় ৫০ হাজার, দেশে মোট আক্রান্ত ১৪ লাখ ছাড়াল

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে পরীক্ষা হয়েছে ৫ লক্ষ ১৫ হাজার ৪৭২ জনের, যা রেকর্ড।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২০ ১০:০৯
Share:

হিসেব বলছে, সংক্রমণের নিরিখে ১৭৯ দিনে ১৪ লক্ষের গণ্ডি ছাড়িয়েছে ভারত। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।

২০ জুলাই ১১ লাখ, ২৩ জুলাই ১২ লাখ, ২৫ জুলাই ১৩ লাখ, ২৭ জুলাই ১৪ লাখ— এ ভাবেই বাড়ছে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। গত দু’দিনে প্রায় এক লক্ষ বেড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ লাখ ছাড়াল। এই আক্রান্ত বৃদ্ধি চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রশাসনের আধিকারিক থেকে চিকিৎসকদের। দৈনিক নতুন সংক্রমণ গত তিন-চার দিন ধরেই ঘোরাফেরা করছে ৪৯-৫০ হাজারের আশেপাশে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ হাজার ৯৩১ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। এই বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল ১৪ লক্ষ ৩৫ হাজার ৪৫৩।

Advertisement

তবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও সংক্রমণের হার কিছুটা কমেছে। প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণের হার ৯.৬৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে পরীক্ষা হয়েছে ৫ লক্ষ ১৫ হাজার ৪৭২ জনের, যা রেকর্ড।

মৃত্যুর নিরিখে স্পেন ও ফ্রান্সকে টপকে গিয়েছে ভারত। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৭০৮ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৩২ হাজার ৭৭১ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১৩ হাজার ৬৫৬ জন। মৃত্যুর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা দিল্লিতে প্রাণ গিয়েছে তিন হাজার ৮২৭ জনের। তিন হাজার ৪৯৪ জনের মৃত্যু নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে তামিলনাড়ু। গুজরাতে দু’হাজার ৩২৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন করোনার কারণে। কর্নাটক (১,৮৭৮), উত্তরপ্রদেশ (১,৪২৬), পশ্চিমবঙ্গ (১,৩৭২) ও অন্ধ্রপ্রদেশে (১,০৪১) মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে রোজদিন বেড়েই চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৮১১), রাজস্থান (৬২১), তেলঙ্গানা (৪৬৩), হরিয়ানা (৩৯২), জম্মু ও কাশ্মীর (৩১২), পঞ্জাব (৩০৬), বিহার (২৪৪) ও ওড়িশা (১৪০)। বাকি রাজ্যগুলিতে মৃতের সংখ্যা এখনও ১০০ পেরোয়নি।

Advertisement

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত হারে বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও বেশ স্বস্তিদায়ক। আক্রান্ত হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ন’লক্ষ মানুষ। মোট আক্রান্তের প্রায় ৬৮ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩১ হাজার ৯৯১ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে মোট নয় লক্ষ ১৭ হাজার ৫৬৭ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হলেন।

শুরু থেকেই মহারাষ্ট্রে বল্গাহীন ভাবে বেড়েছে সংক্রমণ। গোড়া থেকেই এই রাজ্য কার্যত সংক্রমণের শীর্ষে। গত ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ন’হাজার নতুন সংক্রমণের জেরে সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন তিন লক্ষ ৭৫ হাজার ৭৯৯ জন। প্রায় সাত হাজার বেড়ে তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত দু’লক্ষ ১৩ হাজার ৭২৩ জন। জুলাইয়ের শেষ দিকে রাজধানী দিল্লিতে দৈনিক সংক্রমণে বেশ খানিকটা লাগাম পড়েছে। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ ৩০ হাজার ৩৮৯ জন।

গত কয়েক দিনে অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্নাটকে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে দৈনিক সংক্রমণ। যার জেরে সংক্রমণ তালিকার চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে দক্ষিণের এই দুই রাজ্য। কর্নাটকে মোট আক্রান্ত ৯৬ হাজার ২৯৮ জন ও অন্ধ্রপ্রদেশে মোট আক্রান্ত ৯৬ হাজার ১৪১ জন। উত্তরপ্রদেশ (৬৬,৯৮৮), পশ্চিমবঙ্গে (৫৮,৭১৮), গুজরাত (৫৫,৮২২) ও তেলঙ্গানাতেও (৫৪,০৫৯) আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে বিহার (৩৯,১৭৬), রাজস্থান (৩৫,৯০৯), অসম (৩২,২২৮), হরিয়ানা (৩১,৩৩২), মধ্যপ্রদেশ (২৭,৮০০), ওড়িশা (২৫,৩৮৯), কেরল (১৯,০২৫), জম্মু ও কাশ্মীর (১৭,৯২০) ও পঞ্জাব (১৩,২১৮)। ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যে মোট আক্রান্ত এখনও পাঁচ হাজারের আশপাশে।

গত কয়েক দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গে রোজ দু’হাজারেরও বেশি জন কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ রাজ্যের মোট আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে দু’হাজার ৩৪১ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত হলেন ৫৭ হাজার ৭১৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪০ জনের। এ পর্যন্ত মোট এক হাজার ৩৭২ জন রাজ্যবাসীর প্রাণ কেড়েছে করোনা।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement