দেশের কোভিড পরিসংখ্যান। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের দৈনিক সংক্রমণ ছিল ১৫ হাজারের নীচে। মঙ্গলবার তা কমে হল ৯ হাজারের ঘরে। ২০২০ সালের ৪ জুন দৈনিক সংক্রমণ ৮ হাজার থেকে ৯ হাজারে পৌঁছেছিল। তার পর বাড়তে বাড়তে ১ লক্ষের কাছাকাছি চলে গিয়েছিল। এ বার কমতে কমতে দৈনিক সংক্রমণ ফের ৯ হাজারে নামল। যা করোনা পরিস্থিতিতে আশার আলো। পাশাপাশি দৈনিক মৃত্যুও গত ১০ দিনেরও বেশি সময় ধরে ২০০-র নীচে থাকছে। সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও কমে ২ লক্ষের নীচে নেমে কমছে। চুম্বকে এটাই দেশের করোনা-চিত্র।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ১০২ জন। এখনও অবধি দেশে মোট আক্রান্ত ১ কোটি ৬ লক্ষ ৭৬ হাজার ৮৩৮ জন। মোট আক্রান্তে বিশ্বে প্রথম আমেরিকা। সেখানে মোট আক্রান্ত ২ কোটি ৫২ লক্ষ ছাড়িয়েছে। সে দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা এখনও গড়ে দেড়-দুই লক্ষ। ভারতের পিছনে তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলেও দৈনিক সংক্রমণ গত এক মাসে ধরে বেশি। সেখানে মোট আক্রান্ত ৮৮ লক্ষ ৭১ হাজার।
করোনাভাইরাস দেশে এখনও অবধি ১ লক্ষ ৫৩ হাজার ৫৮৭ জনের প্রাণ কেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ১১৭ জন। দেশে মোট মৃত্যুর এক তৃতীয়াংশই মহারাষ্ট্রে (৫০,৮১৫)। কর্নাটক এবং তামিলনাড়ুতে তা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। দিল্লিতে তা সাড়ে ১০ হাজার পার করেছে। পশ্চিমবঙ্গেও তা ১০ হাজার পেরিয়েছে। উত্তরপ্রদেশ এবং অন্ধ্রপ্রদেশও সংখ্যাটা উল্লেখযোগ্য।
এ সবের পাশাপাশি দেশে সুস্থতার হার শুরু থেকেই বেশি। দেশে কোভিড রোগীর সুস্থ হওয়ার সংখ্যা ১ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। ১ কোটি ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার ৯৮৫ জন ইতিমধ্যেই সুস্থ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১৫ হাজার ৯০১ জন। এই সুস্থতার জেরে কমছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। কমতে কমতে তা হয়েছে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার ২৬৬ জন। দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৭ লক্ষ ২৫ হাজার ৫৭৭ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সংক্রমণের হার ১.২৫ শতাংশ।
কেরল বাদে দেশের অন্য রাজ্যগুলিতে নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে দৈনিক সংক্রমণ। মহারাষ্ট্রে তা দু’হাজারের ঘরে ঘোরাফেরা করছে। কিন্তু কেরল এখনও নিয়ন্ত্রণে নয় করোনা সংক্রমণ। সেখানে এখনও রোজ সাড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৫ হাজার লোক আক্রান্ত হচ্ছেন। বাকি সব রাজ্যে দৈনিক আক্রান্ত ৫০০-র আশপাশে। পশ্চিমবঙ্গেও দৈনিক আক্রান্ত উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে গত ক’দিনে। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৫২ জন। এ রাজ্যে মোট আক্রান্ত ৫ লক্ষ ৬৮ হাজার ৩৫৫ জন। যদিও এর মধ্যে ৫ লক্ষ ৫২ হাজার ৮২ জন মানুষই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)