গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
প্রথম দফার লকডাউন ঘোষণার পর লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক ঘরে ফিরতে শুরু করেছিলেন। বহু পথ অতিক্রম করে কেউ বাড়ি পৌঁছেছিলেন। কারও মৃত্যু হয়েছিল রাস্তাতেই। কেন্দ্র পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরার অনুমতি দেওয়ার পর রাস্তায় রাস্তায় ফের সেই পরিস্থিতি ফিরে এসেছে। সেই শ্রমিকদের থামিয়ে খাবার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করুক সরকার— এই মর্মে দায়ের হওয়া একটি জনস্বার্থ মামলা খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতিদের বক্তব্য, ‘‘রাস্তায় কে হাঁটছে, তাদের পর্যবেক্ষণ করা আদালতের পক্ষে অসম্ভব।’’ শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘বিষয়টি রাজ্যগুলিকে ঠিক করেত দিন। আদালত কেন সেটা শুনবে?’’
মামলাটি দায়ের করেছিলেন আইনজীবী আলাখ অলোক শ্রীবাস্তব। তাঁর বক্তব্য ছিল, লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক রাস্তায় হাঁটছেন। মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদে রেললাইনের উপর ঘুমন্ত ১৬ জন পরিযায়ী শ্রমিককে পিষে দিয়েছিল মালগাড়ি। সেই ঘটনার উল্লেখ করে অলোক শ্রীবাস্তবের দাবি ছিল, সরকার তাঁদের থামিয়ে আশ্রয় ও খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করুক।
শুনানির সময় বিচারপতিরা পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘‘রাস্তায় মানুষ হাঁটছেন। তাঁরা থামছেনই না। আমরা কা করে তাঁদের থামাব?’’ ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, ‘‘কেউ যদি রেললাইনের উপর ঘুমায়, তাহলে তাঁদের কে আটকাতে পারে।’’
আরও পড়ুন: প্রবাসীদের ফেরাতে রাজ্য অনেক আগে থেকেই প্রস্তুত, কেন্দ্রকে জানাল নবান্ন
আরও পড়ুন: তিন গুণ ভাড়া বাড়িয়ে পথে নামবে বেসরকারি বাস
শুধুমাত্র সংবাদপত্রের খবরের উপর ভিত্তি করে মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানিয়ে শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, ‘‘প্রত্যেক আইনজীবী সংবাদপত্র পড়ে প্রতিটি বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন। আপনার জ্ঞান পুরোপুরি সংবাদপত্র নির্ভর। তার পরেও আপনি চাইছেন আদালত সিদ্ধান্ত নিক। রাজ্যগুলিকে সিদ্ধান্ত নিতে দিন।’’ আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতিরা আরও বলেন, ‘‘আমরা আপনাকে স্পেশাল পাসের ব্যবস্থা করে দেব। আপনি কি গিয়ে সেই নির্দেশ কার্যকর করতে পারবেন?’’
মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী ছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। সরকার ইতিমধ্যেই পরিয়ায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে যানবাহনের ব্যবস্থা করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, কেউ (পরিযায়ী শ্রমিক) যদি তাঁর নিজের পালা আসার সময় পর্যন্ত অপেক্ষা না করেন, তাহলে সরকারের কী করবে? রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে কথা অনুযায়ী প্রত্যেকেই ঘরে ফেরার সুযোগ পাবেন। তুষার মেহতা আরও বলেন, ‘‘তাঁদের (পরিযায়ী শ্রমিক) উপর বল প্রয়োগ করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।’’